Thank you for trying Sticky AMP!!

যে জমি নিয়ে ঝামেলায় মামলা-গ্রেপ্তারে জড়ালেন মাহিয়া মাহি

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি গতকাল শনিবার গ্রেপ্তারের ৫ ঘণ্টা পর জামিনে মুক্তি পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন

গাজীপুর মহানগরের ব্যস্ততম আউটপাড়া এলাকায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে রকিব সরকার ও ইসমাইল হোসেনের মধ্যে। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয় রকিবের গাড়ির শোরুম। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে রকিবের স্ত্রী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ফেসবুক লাইভে এসে পুলিশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করলে বিষয়টি জনসম্মুখে আসে। রকিব ও মাহির বিরুদ্ধে পুলিশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে।

এলাকাবাসী ও দুই পক্ষের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উত্তর পাশে ইটাহাটা মৌজায় দিঘীরচালা এলাকার হাজী নূরুর ছেলে ইসমাইল হোসেনের নামে সাড়ে ৩২ শতাংশ জমি আছে। এ জমিতে তৈরি করা স্থাপনা মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছিলেন স্টিল কিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। ইসমাইল ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জামানত নিয়েছিলেন ১ কোটি ৫ লাখ টাকা। বছর পাঁচেক আগে মাহিয়া মাহির স্বামী রকিব সরকারের বংশের আবদুল খালেক সরকারের ছেলে মামুন সরকার, সুমন সরকার ও বাবুর কাছে ইসমাইল জমির তিনটি অংশ বিক্রি করে ফেলেন। নিজের দখলে রেখে দেন সোয়া ১১ শতাংশ জমি। একপর্যায়ে ওই জমির পেছনের অংশে ভবন করার পরিকল্পনা করেন তাঁরা চারজন। এ অবস্থায় পেছনের অংশের স্থাপনা সরিয়ে জায়গাটি খালি করে ফেলেন।

Also Read: কারাগারে যাওয়ার সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর মুক্তি পেলেন মাহিয়া মাহি

সুমন সরকার সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে হঠাৎ তাঁদের বংশের সামসুদ্দিন সরকারের ছেলে রকিব সরকার জমিটি দখল করে নেন। সেখানে গড়ে তুলেন ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামের একটি গাড়ির শোরুম। এর পর থেকে ওই চার মালিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে জমিটি উদ্ধারে সহযোগিতা চেয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকেন। এ জমির মালিকানা দাবি করে রকিব সরকার আদালতে মামলাও করেছিলেন। আদালত তাঁদের (সুমন সরকার) পক্ষে রায় দেন।

ইসমাইল হোসেন দাবি করেন, রকিব সরকার ওই জমি দীর্ঘদিন ধরে জবরদখল করে রেখেছেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য দফায় দফায় চেষ্টাও হয়েছে। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর আমদানি করা নতুন কিছু গাড়ি রকিব সরকারের লোকজন শোরুমে ওঠাতে থাকেন। খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। তখন রকিবের লোকজন তাঁদের ওপর হামলা চালান। রকিবের লোকজন নিজেরাই শোরুম ভাঙচুর করেন। এরপর স্বামী রকিব সরকারের সঙ্গে ওমরা পালন করতে যাওয়া মাহিয়া মাহি গত শুক্রবার ফেসবুক লাইভে এসে পুলিশসহ নানাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

Also Read: কারামুক্তির পর যা বললেন মাহিয়া মাহি

লাইভে মাহিয়া মাহি বলেন, একদল দুর্বৃত্ত ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামের তাঁর স্বামীর গাড়ির শোরুমে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। ইসমাইল ও মামুন সরকার এ হামলা করছে বলে লাইভে অভিযোগ করেন তিনি। এ ছাড়া তিনি অভিযোগ করেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেলোয়ার হোসেন দেড় কোটি টাকা ‘ঘুষ’ নিয়ে প্রতিপক্ষকে দিয়ে জমি দখল করিয়ে দিচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি মিথ্যা বলে মানুষের সহানুভূতি নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ করেছেন। এ কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশ বাদী হয়ে রকিব ও মাহির নামে মামলা করেছে।

Also Read: মাহিয়া মাহির স্বামীর গাড়ির শোরুমে হামলা-ভাঙচুর

গতকাল শনিবার বিমানবন্দর থেকে মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তার করার পর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এ সময় তিনি বলেন, ‘মাহিয়া মাহি জমিসংক্রান্ত ঘটনায় পুলিশকে নিয়ে ফেসবুক লাইভে মিথ্যাচার করেছেন, ভিত্তিহীন মন্তব্য করেছেন। এভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে তিনি মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না। আর বিরোধপূর্ণ জমির বিষয়ে মাহি বা রকিব কখনো তাঁর কাছে যাননি।

Also Read: আমি এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কথা বলেছি, পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে নয়: মাহিয়া মাহি