
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘আমরা রাজপথে নেমেছিলাম দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে। চাঁদাবাজি, খুনাখুনি আর লুটপাট দেখার জন্য রাজপথে নামিনি।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ৮ দলের বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম এ কথা বলেন। পাঁচ দফা দাবিতে দুপুর ১২টায় নগরের বেলস পার্কে আট দলের এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান। সমাবেশে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা যোগ দেন।
সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশ থেকে বিশেষ করে বার্তা দিতে চাই, যারা ক্ষমতার লোভে বারবার জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে, হাজার হাজার মায়ের বুক খালি করেছে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে এবং দুর্নীতিতে প্রথম হওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থেকেছে, তাদের জন্য বাংলার মাটিতে আর কোনো জায়গা নেই।’
দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে চরমোনাই পীর বলেন, ‘ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে লুট করেছে, তারা যেন আর কখনো রাষ্ট্রক্ষমতার কাছাকাছি যেতে না পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।’
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দখলের রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, ‘আপনাদের পায়ের নিচের মাটি ইতিমধ্যে সরে গেছে। এখনো সময় আছে, পরিবর্তন হন। না হলে পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই নেতা বলেন, ‘গত ৫৪ বছরে আপনারা বহু শাসন দেখেছেন। এবার ইসলামকে সুযোগ দিন। আমরা একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন ইসলামি কল্যাণরাষ্ট্র উপহার দেব ইনশা আল্লাহ। ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় গেলে দেশে চাঁদাবাজি, অবিচার, খুনাখুনি ও অর্থ পাচারের সংস্কৃতি থাকবে না।’
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ চলবে আল্লাহর আইন দ্বারা ইনশা আল্লাহ। আমরা দুনিয়া নয়, আখেরাত চাই। যাঁরা আল্লাহর দল করবেন, তাঁরা দুনিয়া ও আখেরাত দুটিই পাবেন। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে দেশে কোরআনের আইন চালু করি। ৫৪ বছরে আমরা এদল–ওদল দেখেছি, কিন্তু আগামী দিনে হবে ইসলামি বাংলাদেশ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সংস্কার করে ইসলামের সঙ্গে সংঘর্ষ আছে, এমন আইন বাতিল করে কোরআনের আইন অনুযায়ী সংবিধান তৈরি করব। সেটা আমরা করতে চাই।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশে ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান—সবাই নিরাপদে ও স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবেন। কেউ অঢেল খাবে আর কেউ না খেয়ে থাকবে, এ বৈষম্য থাকবে না।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মুফতি সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুয়াযযম হোসাইন, শফিকুল ইসলাম মাসুদ, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আবদুল বাসির আজাদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) মুখপাত্র রাশেদ প্রধানসহ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, খেলাফত আন্দোলন ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির নেতারা।