
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা ও কিরণগঞ্জ সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। সীমান্তের দুই দেশের কৃষকেরা আজ সোমবার সকাল থেকে নিজ নিজ খেতে কাজ করছেন। সেখান থেকে অতিরিক্ত জনবল প্রত্যাহার করে নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
গত শনিবার দুপুরে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা ও কিরণগঞ্জ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ির মাঝামাঝি এলাকায় এ উত্তেজনা দেখা দেয়। দুপুর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকেরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ভারতীয় নাগরিকদের হামলায় তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। দুই দেশের মানুষের পায়ের চাপায় ওই এলাকায় অন্তত সাত বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ওই পরিস্থিতির পর গতকাল রোববার সকালে কিরণগঞ্জ ও চৌকা সীমান্তের মধ্যবর্তী কালীগঞ্জ মৌজায় ভিড় করেন উৎসুক জনতা। তবে বিজিবি সদস্যরা তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন। আজ সকাল থেকে স্থানীয় কৃষকেরা খেতে কাজ করতে যান। সীমান্তের দুই পাশেই কৃষকের সংখ্যা কম ছিল।
এ সম্পর্কে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, চৌকা ও কিরণগঞ্জ সীমান্তে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখান থেকে অতিরিক্ত জনবল প্রত্যাহার করা হয়েছে। উভয় দেশের কৃষকেরা ফসলের মাঠে কাজ করছেন। তবে কৃষক পরিচয়ের বাইরে সীমান্তবর্তী মাঠে কাউকে নামতে দিচ্ছে না বিজিবি। আজ উৎসুক জনতার কোনো ভিড় নেই।
কালীগঞ্জ এলাকার কৃষক মাইনুল ইসলাম আজ সীমান্ত এলাকায় নিজের শসাখেতে কাজ করেছেন। আশপাশের অন্য কৃষককে কাজ করতে দেখেছেন। তিনি বলেন, স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় আজ মাঠে কৃষক কম ছিল। সীমান্তের ওপারে ভারতের জমিতেও সেখানকার কৃষকেরা কাজ করেছেন।
শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় লোকজনের পদপিষ্ট হয়ে মাইনুল ইসলামের টমেটো, পেঁয়াজ ও ধনেখেত নষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গতকাল কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের খেত দেখে গেছেন। আশা করি, কৃষি বিভাগ থেকে আমরা ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা পাব।’
কালীগঞ্জ বড়বাজার এলাকার কৃষক আবদুর রশিদ বলেন, ‘আমি আজ ভুট্টাখেতে কাজ করিনি। তবে খেতের ফসল দেখে এসেছি। ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দুই বিঘা ভুট্টা চাষ করেছিলাম। এর মধ্যে সংঘর্ষের দিন শনিবার ভারতের লোকজন এক বিঘা জমির ভুট্টা নষ্ট করেছে। কৃষি বিভাগ ক্ষতিপূরণ দিলে উপকার হতো। ঋণ শোধ নিয়ে চিন্তায় আছি।’