মাদারীপুরে শৌচাগার থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকটি পেয়েছে নতুন বাবা-মা। মঙ্গলবার বিকেলে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে
মাদারীপুরে শৌচাগার থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকটি পেয়েছে নতুন বাবা-মা। মঙ্গলবার বিকেলে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে

মাদারীপুরে হাসপাতালের শৌচাগার থেকে উদ্ধার নবজাতক পেল নতুন ঠিকানা

মাদারীপুরে বেসরকারি একটি হাসপাতালের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতক নতুন ঠিকানা পেয়েছে। মাদারীপুর শহরের বাসিন্দা এক সিঙ্গাপুরপ্রবাসীর ঘরে তার ঠাঁই হয়েছে। ৩৫টি আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে সাড়ে তিন লাখ টাকা বন্ডে আজ মঙ্গলবার নিঃসন্তান ওই প্রবাসীর কাছে নবজাতকটি তুলে দেওয়া হয়।

২ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শহরের লেকের দক্ষিণ পাড়ের বাবু চৌধুরী জেনারেল হাসপাতালের শৌচাগারের ভেতর রক্তাক্ত অবস্থায় এক নবজাতককে দেখতে পান পরিচ্ছন্নতাকর্মী সাথী বেগম। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির মা-বাবাকে খুঁজতে সমাজসেবা অধিদপ্তর থানায় সাধারণ ডায়েরি করলেও তাঁদের সন্ধান পায়নি পুলিশ।

শিশুটিকে দত্তক নিতে উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তরে ভিড় করেন অনেক নিঃসন্তান দম্পতি। পরে নবজাতকটির দায়িত্ব নিতে মাদারীপুর শিশু আদালতে ৩৫টি আবেদন জমা হয়। গতকাল সোমবার দিনব্যাপী শুনানি চলে। পরে যাচাই-বাছাই শেষে সিঙ্গাপুরপ্রবাসী নাদিম আকন ও সাদিয়া আক্তার দম্পতিকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আদালত। সাড়ে তিন লাখ টাকা বন্ডসহ পাঁচটি শর্তে নবজাতকটির দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া হয়। পরে আজ মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়।

মাদারীপুর শহরের পাঠকাকান্দি এলাকায় বসবাস করেন সাদিয়া আক্তার ও নাদিম আকন দম্পতি। সিঙ্গাপুরপ্রবাসী নাদিম আকন বলেন, ‘আমি শিশুটিকে নেওয়ার জন্য সিঙ্গাপুর থেকে ছুটে এসেছি। আমি মেয়েটিকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলব। কোথাও কোনো কমতি রাখব না।’

সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘এই শিশু এখন থেকে আমাদের সন্তান। মায়ের আদর দিয়ে ওকে মানুষ করব। কোনো কষ্ট-দুঃখ হতে দেব না। সুখে-শান্তিতে আমাদের সঙ্গেই থাকবে সে।’

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাদারীপুর কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা শেখ নাহিয়ান ওয়াহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিশুটির খোঁজখবর নিয়ে দুই মাস পরপর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করবে।’