যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অর্থিক সহায়তা চাইতে গেলে কর্মচারীদের দ্বারা হেনস্থার শিকার হন শারীরিক প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তি। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পক্ষ নিলে কর্মচারিরা তাদের আটকে রাখে। বুধবার দুপুরে
যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অর্থিক সহায়তা চাইতে গেলে কর্মচারীদের দ্বারা হেনস্থার শিকার হন শারীরিক প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তি। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পক্ষ নিলে কর্মচারিরা তাদের আটকে রাখে। বুধবার দুপুরে

যশোর ডিসি অফিসে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সাহায্য চাওয়া নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড

যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা চাইতে গিয়ে কর্মচারীদের হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তি। কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পক্ষ নিলে কর্মচারীরা পাঁচ শিক্ষার্থীকে আটকে রাখেন। পরে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম অভিভাবকদের ডেকে তাঁদের হাতে শিক্ষার্থীদের তুলে দিয়ে বিষয়টি সমাধান করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে আজ বুধবার দুপুরে। প্রতিবন্ধী ওই ব্যক্তির নাম মনিরুল ইসলাম (৪৫)। তাঁর বাড়ি যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া এলাকায়। তাঁর পক্ষ নিয়ে আটক হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ, মুসলিম একাডেমি ও যশোর জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী।

পুলিশ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানির দিন ছিল। এ সময় শারীরিক প্রতিবন্ধী মনিরুল ক্রাচে ভর দিয়ে আর্থিক সহায়তা চাইতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সার্বিক) অফিসকক্ষের সামনে যান। এ সময় অফিস সহকারী বাবুল আক্তার মনিরুলকে জানিয়ে দেন, ‘স্যার মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন। পরে আসেন।’ এ সময় মনিরুল বিরক্ত হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে কিছু কটুকথা বলেন। তখন বাবুল ওই ব্যক্তির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় উত্তেজিত হয়ে মনিরুল হাতে থাকা ক্রাচ দিয়ে বাবুলকে আঘাত করেন। অন্য একজন কর্মচারী এগিয়ে গিয়ে মনিরুলকে জাপটে ধরলে তাঁর হাত কামড়ে দেন।

এ সময় ওই চত্বরে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী বসে গল্প করছিল। হট্টগোল দেখে তারা প্রতিবন্ধী মনিরুলের পক্ষ নিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে কথা–কাটাকাটিতে জড়ায়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নেজারত শাখায় গিয়ে লাঠিসোঁটা দিয়ে টেবিলে আঘাত করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঁচজনকে নেজারত শাখায় আটকে রাখেন কর্মচারীরা। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছিলেন ওই চত্বরে। তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম অভিভাবকদের ডেকে মুচলেকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতি বুধবার বিভিন্ন বিষয়ে গণশুনানি হয়। ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি গণশুনানিতে আসেন। তিনি সহায়তা চাইলে কর্মচারী তাঁকে একটু পরে আসতে বলেন। তখন ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে ক্রাচ দিয়ে এক কর্মচারীকে আঘাত করেন। এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী মব করে কর্মচারীদের ওপর হামলা করে। পরে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটকে তাদের অভিভাবকদের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। গণশুনানির দিনে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রায়ই ঘটে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

নেজারত শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহিদুজ্জামান বলেন, ‘১০-১৫ জন শিক্ষার্থী আমাদের কক্ষে হামলা চালায়। তাদের মধ্যে একজনের হাতে বাঁশ ছিল। সে আমাদের কক্ষের দরজা ও জানালায় আঘাত করে।’

আটক হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী জানায়, তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে থাকার সময় দেখে অসহায় এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে কয়েকজন ধরে মারধর করছেন। এগিয়ে গিয়ে জানতে পারে, যাঁরা মারছেন তাঁরা জেলা প্রশাসকের কর্মচারী। তখন এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন। এ জন্য আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।