
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় খাসজমিতে তরমুজ চাষকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় তিন নারীসহ অন্তত ২৪ জন আহত হয়েছেন। ইজারা পাওয়া জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে গতকাল বৃহস্পতিবার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা ও তাঁদের সহযোগীরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জনকে গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও আহত ব্যক্তিদের সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপা ভূমি প্রশাসন চরবাংলা এলাকার ১৫৫ কৃষকের নামে খাসজমি ইজারা দেয়। ওই জমিতে তরমুজ চাষের জন্য নামতেই চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মতিন এবং চরবাংলা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার একাধিকবার বাধা দেন এবং কৃষকদের মারধর করেন। ঘটনার পর ভুক্তভোগীরা গলাচিপা থানায় অভিযোগ করলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন আদালত। পরে তাঁরা আদালতে গিয়ে ভবিষ্যতে সংঘর্ষে জড়াবেন না বলে মুচলেকা দেন।
তবে গতকাল দুপুরে কৃষকেরা আবার এসব জমিতে চাষ দিতে গেলে তাঁদের ওপর হামলা হয়। আহত কৃষক জালাল তালুকদার বলেন, ভূমি অফিস থেকে ইজারা পাওয়া জমিতে চাষাবাদ ও ঘর তুলতে গেলে বাকের বিশ্বাস, মতিউর রহমান ও আনোয়ার হাওলাদার নিজেদের লোকজন নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। গত শনিবার গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উভয় পক্ষকে নিয়ে জমি ভাগাভাগি করেন। এর মাধ্যমে বিরোধে সমাধান করা হলেও বিএনপির এসব ব্যক্তি গতকাল আবার কৃষকদের ওপর হামলা চালান।
হামলায় অভিযুক্ত চরবাংলা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার বলেন, বিরোধপূর্ণ খাসজমিতে তাঁদের ঘর ছিল। গতকাল সেটি ভেঙে অন্যরা সেখানে ঘর নির্মাণ করছিল। এ কারণে তাঁদের প্রতিহত করা হয়েছে।
তবে হামলা ও মারধরের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস। তিনি বলেন, ঘটনার সময় দশমিনা উপজেলায় ছিলেন। তবে হামলার ঘটনাটি তিনি জেনেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।
এ প্রসঙ্গে গলাচিপা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহামুদুল হাসান বলেন, গত শনিবার উভয় পক্ষকে নিয়ে বসা হয়েছিল। ওই সময় কৃষকদের বিরোধীপক্ষ অর্থাৎ এই হামলার সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এখন আবার তাঁরাই কৃষকদের মারধর করেছেন, এটি দুঃখজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন গলাচিপা থানার ওসি আশাদুর রহমান।