Thank you for trying Sticky AMP!!

ঠাকুরগাঁও সদরের নারগুন ইউনিয়নে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন রমেশ চন্দ্র সেন। বুধবার বিকেলে

‘বিএনপির ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে না এলে সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে নাম কাটা যাবে’

নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির সমর্থকেরা ভোট দিতে না গেলে তাঁদের নাম বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে কাটা যাবে। প্রকাশ্য সভায় এ হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

আজ বুধবার ঠাকুরগাঁও সদরের নারগুন ইউনিয়নে পোকাতি সেন্টার হাটে নির্বাচনী জনসভায় রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, ‘বিএনপির যে সমস্ত ফ্লোটিং ভোটার, তাঁরা যেন ভোট দিতে যান। যদি ভোট দিতে না যান, আর যদি তাঁরা সুবিধাভোগী হন, তাহলে তালিকা থেকে তাঁদের নাম কাটা যাবে। আমরা কিন্তু এক কথার লোক। আমি দিয়েছি, আমি কাটব। আর যদি আপনারা যান, সেখানে সব সেন্টার কমিটির ছেলেপেলে থাকবে, সভাপতি-সম্পাদক থাকবে, তাঁরা কিন্তু মার্ক করবে। প্রত্যেকটা মার্ক করবে। যদি না যান, তাহলে কিন্তু সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Also Read: পাবনায় কেন্দ্র দখল করে ‘ওপেন ভোট’ দেওয়ার হুমকি দেওয়া নেতাকে নোটিশ

বিকেল চারটায় এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। রমেশ চন্দ্র সেন ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ আসনে নৌকার মনোনীত প্রাথী।

জনসভায় এলাকার নানা উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিশাল এলাকায় আমরা যে উন্নয়ন করেছি, ঢাকা-চট্টগ্রাম ছাড়া কেউ করতে পারেনি। আমি মন্ত্রী থাকার সুবাদে যখন যেখানে প্রয়োজন তা করেছি। এমন কোনো কাজ নাই যে করিনি। আগামীবার আমরা ক্ষমতায় আসব। যেহেতু আমাদের কর্মকাণ্ড অত্যধিক ভালো। আমরা এক পয়সা খাই না। কেউ বলতে পারবে না, আমাদের টাকা দেয়। যদি দুই–একটা কেউ দেয়, তা আমাদের দলের পেছনে চলে যায়। ওই সমস্ত টাকা আমরা ছুঁইও না, খাইও না।’

Also Read: সাংবাদিককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিলেন সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন

রমেশ চন্দ্র সেন আরও বলেন, ‘আমি এর আগে এখানে এসে সেন্টার কমিটি করেছিলাম। সেন্টার কমিটি করে দিয়ে আপনাদের একটা দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আজ জনসভা করা হচ্ছে। এই জনসভার অর্থই হলো আপনারা সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন। মায়েরা আগে যাবেন, ভোট দিয়ে আসবেন। আর ছেলেরা, যাঁরা গার্ডিয়ান আছেন, তাঁরা পরে গিয়ে ভোট দিবেন। তবে গার্ডিয়ানরা থাকবেন। উৎসবমুখর পরিবেশে যেন ভোট হয়। সেখানে কেউ আপনাকে টাচ করতে পারবে না। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, কেউ টাচ করতে পারবে না। যদি কেউ একটা কিছু করে, তবে তার প্রতিদান সঙ্গে সঙ্গে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে সেনাবাহিনী থাকবে, বিজিবি থাকবে, র‍্যাব থাকবে, পুলিশ বাহিনী থাকবে। সেই সঙ্গে আমাদের ২০০-৩০০ ছেলেপেলে থাকবে। আমরা কিন্তু কাউকে ছেড়ে দিব না। একবার ভুল করেছি, আর ভুল করব না। আপনারা সজাগ থাকবেন।’

এ বক্তব্যের বিষয়ে কথা বলতে রমেশ চন্দ্র সেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

Also Read: আওয়ামী লীগ নেতাকে জুতার মালা পরানোর হুমকি দিয়ে শোকজের চিঠি পেলেন শাহদাব আকবর

ওই নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেরেকুল ইসলাম। সংসদ সদস্যর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাকা (রমেশ চন্দ্র সেন) কোনো জনসভায় এমন বক্তব্য দেন না। আজ যে কী হলো? এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি হয়তো সেই বিবেচনায় এটা বলে ফেলেছেন।’

এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা নির্বাচন–সম্পর্কিত বক্তব্য হতে পারে না। এটা ভিন্ন ধরনের বক্তব্য। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।’

Also Read: ‘নির্বাচন না করার হুমকি’ পেয়ে নিরাপত্তা চাইলেন ডলি সায়ন্তনী