
আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এই আসনে দলটির প্রার্থী করা হয়েছে খ্যাতিমান চিকিৎসক কর্নেল (অব.) অধ্যাপক জিহাদ খানকে। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য। পারিবারিক আত্মীয়তার সূত্রে তিনি সাবেক দুবারের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শ্যালক। এ ছাড়া তিনি প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক চিকিৎসক আ ন ম নৌশাদ খানের ছোট ভাই।
আজ শুক্রবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মো. রমজান আলী জিহাদ খানের প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্র থেকে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কর্নেল (অব.) জিহাদ খানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
জিহাদ খান বর্তমানে ইবনে সিনা হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত। এর আগে তিনি ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) হৃদ্রোগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। বিভাগের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
জিহাদ খান বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশ-বিদেশের অনেক মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেওয়াসহ নানাভাবে সহযোগিতা করতে পারলেও তাঁর নিজ এলাকার মানুষকে এভাবে সেবা করার সুযোগ পাননি। এখন তিনি সে সুযোগটা কাজে লাগাতে চান। করিমগঞ্জ ও তাড়াইলের মানুষদের সেবা করতে চান। তবে এর আগেও এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ, জামায়াতের লোকজনসহ যিনিই তাঁর কাছে গেছেন, তিনি ইবনে সিনা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাসহ তাঁদের যথাসাধ্য সহায়তা করার চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া তিনি বিগত ১৫-১৬ বছর কিশোরগঞ্জ জামায়াতে ইসলামীর নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়াসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন।
এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটির সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছিল জামায়াত। বাকি ছিল কিশোরগঞ্জ-৩ আসনটি। অন্য আসনগুলোতে জামায়াতের ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে জামায়াতের জেলা কমিটির সদস্য মোসাদ্দেক আলী ভূঁইয়া; কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে কটিয়াদী উপজেলা জামায়াতের সদস্য শফিকুল ইসলাম; কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সাবেক ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ রোকন রেজা; কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে জেলা জামায়াতের আমির রমজান আলী এবং কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে ভৈরব উপজেলা জামায়াতের আমির কবির হোসেন।
জেলা জামায়াতের আমির রমজান আলী বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদরের উবাই পার্কে কিশোরগঞ্জ জেলা ও উপজেলার জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্যদের নিয়ে বার্ষিক পরিকল্পনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সামিউল হক ফারুকী কিশোরগঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছিলেন। শুধু বাকি ছিল কিশোরগঞ্জ-৩ আসনটি। এটির ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে অনেকটা উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
জেলা জামায়াতের আমির দাবি করেন, প্রার্থী নির্বাচনে স্থানীয় মতামত ও মাঠপর্যায়ের জরিপকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘোষিত প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণাসহ তৃণমূলের মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের দুঃখ-দুর্দশার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।