
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বামরাইল সেতু দ্রুত সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। আজ সোমবার দুপুরে উজিরপুর উপজেলার বামরাইল সেতু এলাকায় এ মানববন্ধন হয়। এতে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বামরাইল সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু এখন বালুর বস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনার পাশাপাশি পুরো দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন জরুরি একটি মহাসড়কের সেতু এই অবস্থায় ফেলে রাখার ঘটনা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ছাড়া কিছু নয়। তাঁরা অবিলম্বে সেতুটি সংস্কারের পাশাপাশি অস্থায়ী বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা করে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাসদের উজিরপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আবুল কালাম, সদস্যসচিব মঞ্জুর মোর্শেদ, বাসদ বরিশাল জেলা শাখার বর্ধিত ফোরামের সদস্য সাগর দাস, অলিম্পিক সিমেন্ট অ্যান্ড ফাইবার্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম সরদার, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের ওটরা ইউনিয়ন শাখার সভাপতি লাকি বেগম, বাসদ ওটরা ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক হরি দাস রায় ও সদস্যসচিব খোকন গাজী। মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধিদল বামরাইল সেতু সংস্কারের দাবিতে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল বাজার এলাকার পুরোনো ওই সেতুটির নিচের তিনটি গার্ডারের মধ্যে দুটি গার্ডারে ফাটল ধরে সম্প্রতি। এতে সেতুটি এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে। যেকোনো মুহূর্তে এটি ভেঙে পড়লে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন যানবাহনের চালক ও স্থানীয় ব্যক্তিরা।
এমন পরিস্থিতিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সেতুটি টিকিয়ে রাখতে আপাতত সেতুটির নিচে স্তূপাকারে বালুভর্তি বস্তা রেখে অস্থায়ীভাবে ধস রোধ করার চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে সেতুটির দুপাশে সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে পাঁচ টনের ওপরে মালবোঝাই ট্রাক চলাচলে সতর্কতা জারি করেছে। তবে এলাকার লোকজন বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা কেউ মানছেন না। সেতুর ওপর দিয়ে ২০ থেকে ২২ টন ভারী পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করছে অনবরত।
সওজের বরিশাল কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আপাতত বালুভর্তি বস্তা দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রেখেছি। এ ছাড়া এরই মধ্যে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য নকশা করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। নকশা অনুমোদন হয়ে গেলে আমরা দ্রুত এখানে নতুন সেতুর কাজ শুরু করব।’ এর আগে বিকল্প কোনো কিছু যেমন বেইলি সেতু করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চিন্তা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি খুবই ব্যস্ততম মহাসড়ক, প্রতিদিন হাজারো ভারী যান চলাচল করে। সে ক্ষেত্রে বেইলি সেতু আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে এটি বিবেচনা করার সুযোগ নেই।