নিহত আলমগীর হোসেন
নিহত আলমগীর হোসেন

‘মাদকবিরোধী অবস্থান নেওয়ায়’ যুবককে হাত-পা বেঁধে চোখ উপড়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

ময়মনসিংহের নান্দাইলে প্রবাসফেরত এক যুবকের চোখ উপড়ে দেওয়া হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির স্বজনদের ভাষ্য, ‘মাদকবিরোধী অবস্থানের কারণে’ পরিকল্পিতভাবে ওই যুবককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজ রোববার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

নিহত যুবকের নাম আলমগীর হোসেন (৩০)। তিনি নান্দাইলের শেরপুর ইউনিয়নের সংগ্রামখেলী গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। গতকাল শনিবার দুপুরে সংগ্রামখেলী বাজারের পাশে একটি বাঁশবাগানের ঝোপ থেকে তাঁর মাটিচাপা দেওয়া বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গত বুধবার থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

এ ঘটনায় নিহত আলমগীরের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ গতকাল রাতে উপজেলার আবদুল্লাহপুরের একতা বাজার থেকে মামলার আসামি ইমাম হোসেন ওরফে রতনকে (৩৩) গ্রেপ্তার করে। আজ তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিহত আলমগীর হোসেন একসময় সৌদি আরবে থাকতেন। তিন বছর আগে দেশে ফিরে এলাকায় কৃষিকাজ করতেন। এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকায় তিনি প্রতিবাদ করতেন। এ নিয়ে মাদক কারবারিদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার তাঁর ঝগড়া হয়েছে। গত সপ্তাহেও আলমগীরের সঙ্গে কয়েকজনের বাক্‌বিতণ্ডা হয়। এরপর বুধবার রাতে আলমগীর হোসেন নিখোঁজ হন। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পাওয়ায় স্বজনদের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

গতকাল বেলা দুইটার দিকে শেরপুর ইউনিয়নের সংগ্রামখেলী মধ্য বাজারের একটি বাঁশবাগানের ঝোপ থেকে পচা গন্ধ বের হলে স্থানীয় লোকজন পুঁতে রাখা বস্তায় মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত আলমগীরের ভাবি সাদিয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার দেবর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাঁরা তাঁকে হত্যা করেছেন। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার জালাল উদ্দীন মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত যুবক মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। মূলত এ কারণে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। গলায় দড়ি দিয়ে শ্বাস রোধ করার পর ঘাড় মটকে দেওয়া হয়। হাত-পা বাঁধা ছিল। দুটি চোখ উপড়ে দিয়ে নৃশংসভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। গ্রেপ্তার ইমাম হোসেন জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করলেও পুলিশ তদন্তে তাঁর সম্পৃক্ততা পেয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।