
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিতব্য কদম রসুল সেতুর নারায়ণগঞ্জ শহর প্রান্তের সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ সরিয়ে নেওয়ার দাবি উঠেছে। এ দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বরাবর নাগরিক আন্দোলনের নেতারা স্মারকলিপি দিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বির নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংগঠনের সদস্য ভবানী শংকর রায়, জিয়াউল ইসলাম, জাহিদুল হক, ধীমান সাহা, হাফিজুল ইসলাম, আবু নাঈম প্রমুখ। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।
শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর কদম রসুল সেতুটি ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন হয়। ৭৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এ সেতুর নির্মাণকাজের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করবে। পশ্চিমে এই সেতুর সংযোগ সড়ক নারায়ণগঞ্জ শহরের ফলপট্টিতে সরু নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে। এ নিয়েই মূলত নাগরিক নেতাদের আপত্তি। এ জন্য সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ সরিয়ে নিয়ে প্রশস্ত কোনো সড়কের সঙ্গে যুক্ত করার দাবি তুলেছেন তাঁরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ‘শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়কে সংযুক্ত করার প্রয়োজনে কদম রসুল সেতু নির্মাণের সংবাদটি আমাদের আনন্দিত করেছে। কিন্তু এই সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন থেকে শুরু হলেও সেতুর ব্যবহারকারী নাগরিকদের সঙ্গে প্রকল্প নিয়ে মতবিনিময় বা তাঁদের অভিমত জানার জন্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যা এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল বলে আমরা মনে করি।’
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘কদম রসুল সেতুটির প্রকল্প নকশায় দেখা গেছে, সেতুর পশ্চিমাংশের প্রবেশমুখটি শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক ফলপট্টি এলাকায় নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে এসে নেমেছে। এটি এভাবে বাস্তবায়িত হলে তা নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য ভয়াবহ দুর্ভোগের কারণ হবে বলে আমরা মনে করি। এমনিতে ১ নম্বর রেলগেট থেকে পুরো নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কটিতে সব সময় অস্বাভাবিক ট্রাফিক জ্যাম থাকে। এখানে শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় স্কুল নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল, পাশে নারায়ণগঞ্জ কলেজ, এর সঙ্গে দিগুবাবু বাজারে প্রবেশের মুখ, সর্বোপরি এটি শহরের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটের সংযোগ সড়ক হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত যেমন ভয়াবহ যানজট থাকে, আবার বিভিন্ন সময় এখানে রেললাইনের কাছে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এমন একটি ব্যস্ততম সড়কে কদম রসুল সেতুর প্রবেশমুখ যদি যুক্ত হয়, তাহলে সে সেতু থেকে যানবাহন সড়কে নামার ক্ষেত্রে যেমন সংকটে পড়বে, অন্যদিকে এই পুরো এলাকাই সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে।’
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আমরা অতিদ্রুত যথাযথ সমীক্ষার মাধ্যমে এই ত্রুটি সমাধান করে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর পশ্চিমাংশের মুখটি পুনর্নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাগরিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে দেওয়া স্মারকলিপি আমরা পেয়েছি। তাদের দাবির বিষয়ের সঙ্গে আমরাও একমত। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। তাদের স্মারকলিপির কপিটিও আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব।’