
চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রামে তিন দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকে। এরপর নগরের নিচু এলাকাগুলোয় গোড়ালি থেকে হাঁটুসমান পানি উঠে যায়।
মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে চট্টগ্রামসহ তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগে পাহাড়ধসের আশঙ্কার কথাও জানানো হয়েছে। সবশেষ আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৬০ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
টানা ভারী বৃষ্টিতে প্রতিবছর চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। আজ সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর কোথাও জলাবদ্ধতার খবর মেলেনি। তবে বৃষ্টিতে নগরের আগ্রাবাদ, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, ইপিজেড ও পতেঙ্গার আশপাশে নিচু এলাকাগুলোয় গোড়ালি থেকে হাঁটুসমান পানি উঠে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির পাশাপাশি জোয়ারের পানি বাড়তি ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চট্টগ্রামে সকাল ৬টা ১১ মিনিটে জোয়ার শুরু হয়। জোয়ারের পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু এলাকা ডুবে যেতে শুরু করে। তবে দুপুর ১২টা ৩ মিনিটে ভাটা শুরু হওয়ায় পানি আবার নামতে শুরু করেছে।
সরেজমিনে আজ দুপুর ১২টায় নগরের কাপাসগোলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে পানি মাড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন পথচারীরা। সড়কে এ সময় গোড়ালি থেকে হাঁটু পর্যন্ত পানি। গণপরিবহনগুলো ধীরগতিতে চলাচল করছে। আশপাশের দোকানগুলোয়ও পানি জমে থাকতে দেখা যায়। বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বের হয়ে দুর্ভোগে পড়েন কর্মমুখী মানুষ।
বৃষ্টির কারণে সকালে অফিসগামী যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যানবাহন কম থাকায় অনেককে সড়কে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। সকাল সাড়ে আটটার দিকে নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় বেসরকারি চাকরিজীবী সাইদুল হক বলেন, প্রায় এক ঘণ্টার মতো দাঁড়িয়ে থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা পাওয়া যাচ্ছে না। যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো ভাড়া চাইছে বেশি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, নগরের কিছু জায়গায় নিচু সড়কে পানি জমে থাকছে। প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে রাস্তাগুলো একই লেভেলে আনতে হবে। যেসব এলাকায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেখানে ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে।
এদিকে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে চট্টগ্রামসহ তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগে পাহাড়ধসের আশঙ্কার কথাও জানানো হয়েছে। আজ সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবিরের সই করা এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
সতর্কবার্তায় বলা হয়, দক্ষিণ–পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। চট্টগ্রামসহ দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায়।