Thank you for trying Sticky AMP!!

শাম্মী আহম্মেদ

সংরক্ষিত আসনে আ.লীগের মনোনয়ন পেলেন শাম্মী, হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জে উচ্ছ্বাস

দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে বরিশাল থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ। ওই খবরে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ভোটের পর কোণঠাসা হয়ে পড়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁরা হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জে দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করেছেন।

আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের চূড়ান্ত ৪৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ওই তালিকায় শাম্মী আহমেদও আছেন। সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে শাম্মী আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ও হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জবাসীর প্রতি আস্থা সমুন্নত রেখেছেন। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

এবারের নির্বাচনে বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন শাম্মী আহমেদ। দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সংসদ সদস্য পংকজ নাথ। কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্বসংক্রান্ত জটিলতায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি শাম্মী। ওই আসনে আবার সংসদ সদস্য হয়েছেন পংকজ নাথ।

ভোটের পর হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জে কোণঠাসা হয়ে পড়েন শাম্মীর সমর্থক নেতা-কর্মীরা। দুই উপজেলায় ভোটের পর এক মাসে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৫০টি সংঘাতের ঘটনা ঘটে। সব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা মামলা না করলেও দুই থানায় অন্তত ১৫টি মামলা হয়। মামলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের ১৪২ জনকে আসামি করা হয়। হামলার আশঙ্কায় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকে এলাকায় ফিরতে পারছিলেন না। এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে পংকজের সমর্থকেরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন বলে অভিযোগ করা হয়। তবে পংকজ নাথ ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।

সংরক্ষিত নারী আসনে শাম্মী আহমেদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর তাঁর সমর্থকেরা দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করেন। বুধবার সন্ধ্যায় হিজলা সদরের কাউরিয়া এলাকায় শাম্মীর নির্বাচনী কার্যালয়ে

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, দলীয় মনোনয়ন পেয়েও আদালতের নির্দেশে তা বাতিল হওয়ায় শাম্মীর সমর্থক নেতা-কর্মীরা একের পর এক হামলায় চরম বিপদের মধ্যে পড়েন। এখন সংরক্ষিত নারী আসনে তিনি সংসদ সদস্য হলে এলাকার রাজনীতিতে ভারসাম্য আসবে। পংকজ নাথের একক কর্তৃত্বও খর্ব হবে। কারণ, হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী শাম্মীর পক্ষে রয়েছেন।

শাম্মী আহমেদের পক্ষে ৭ ফেব্রুয়ারি সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ। সিরাজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাম্মী আহমেদের বাবা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। দল ও দেশের জন্য কাজ করার চিন্তা থেকেই তাঁর পক্ষে আমরা সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে মূল্যায়ন করেছেন। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’

শাম্মীর মনোনয়নের খবরে সন্ধ্যায় হিজলা–মেহেন্দীগঞ্জে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় অনেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ মাহমুদের নেতৃত্বে উপজেলার কাউরিয়া এলাকায় শাম্মীর নির্বাচনী কার্যালয়ে দোয়ার আয়োজন করেন সমর্থকেরা। এ সময় শাম্মীর পক্ষে হিজলার সব নেতা-কর্মীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ। একইভাবে মেহেন্দীগঞ্জে দলীয় কার্যালয়ে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

সুলতান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, শাম্মী আহমেদ সংসদ সদস্য হওয়ায় হিজলার নেতা-কর্মীদের অনেক দিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। অপশক্তির নির্যাতন থেকে নেতা-কর্মীরা এখন মুক্ত হবেন।