Thank you for trying Sticky AMP!!

বাড়িতে মায়ের লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে দুই ভাই

মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে দুই ভাই সাইফুল ইসলাম মল্লিক (বাঁয়ে) ও আসাদ মল্লিক (ডানে সবার সামনে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার রাতে মারা যান মা। রাতে হাসপাতাল থেকে মরদেহ বাড়িতে নেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় অংশ নেয় দুই ভাই সাইফুল ইসলাম মল্লিক ও আসাদ মল্লিক।

সাইফুল ও আসাদ পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার জোলাগাতি গ্রামের আবুল হোসেন মল্লিক ও সদ্য প্রয়াত শাহানা বেগম দম্পতির ছেলে। ওই দম্পতির তিন ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে সাইফুল ষষ্ঠ সন্তান ও আসাদ সবার ছোট। পাশের ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর ভিটাবাড়িয়া নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে সাইফুল ও আসাদ। ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে দুই ভাই।

Also Read: মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষার হলে দুই বোন

মা আমাদের সব ভাইবোনকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি চাইতেন, আমরা দুই ভাই পড়াশোনা করে যেন শিক্ষিত হই। মায়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।
সাইফুল ইসলাম মল্লিক, পরীক্ষার্থী

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শাহানা বেগমের (৫৫) ডায়াবেটিস ছিল। গত মঙ্গলবার তাঁকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন বুধবার রাত ১০টার দিকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই রাতে শাহানা বেগমের মরদেহ কাউখালী উপজেলার জোলাগাতি গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। মায়ের মৃত্যুতে এসএসসি পরীক্ষার্থী দুই ভাই সাইফুল ও আসাদ শোকে মুষড়ে পড়ে। এরপরও আজ সকালে দুই ভাই মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিতে যায়। দুপুরে দুই সন্তান পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পর শাহানা বেগমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

Also Read: বাবার লাশ বাসায় রেখে এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেয়ে

সাইফুল ও আসাদের চাচা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের স্ত্রীর মৃত্যুর পর পরিবারের সবাই শোকাহত। ভাইয়ের দুই ছেলে মায়ের মৃত্যুশোকের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। আমরা ওদের পরীক্ষা দিতে সাহস জুগিয়েছি।’

পরীক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম মল্লিক বলে, ‘মা আমাদের সব ভাইবোনকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি চাইতেন, আমরা দুই ভাই পড়াশোনা করে যেন শিক্ষিত হই। মায়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।’

Also Read: বাড়িতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষার হলে স্বর্ণা

ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব মো. মাহামুদ চৌধুরী বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম মল্লিক ও আসাদ মল্লিক নামের দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীর মায়ের মৃত্যু হয়েছে। মাকে হারিয়ে তারা ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। আমি তাদের খোঁজখবর নিয়েছি। সান্ত্বনা দিয়েছি। তাদের পরীক্ষা ভালো হয়েছে।’

ভান্ডারিয়া উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো. জহিরুল আলম বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে মা হারানো দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীর খোঁজখবর নিয়েছি।’

Also Read: মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থী