পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে ‘ঘুষ সাধার’ অভিযোগ উঠেছে ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) বিরুদ্ধে।
এমন অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের বিচারক (সিনিয়র জেলা জজ) নীলুফার শিরিন চিঠি দিয়েছেন ঢাকার বার কাউন্সিলের সচিবের কাছে। অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা আইনজীবী সমিতিতে।
এমন অভিযোগ ওঠার পর পিপি রুহুল আমিনের জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিচারক নীলুফার শিরিনের লিখিত অভিযোগে বলা হয়, বুধবার সকাল ৯টার দিকে সরকারি কৌঁসুলি রুহুল আমিনের একজন লোক তাঁর বাসার গৃহকর্মীর কাছে একটি লাল ব্যাগ দিয়ে যান। ওই ব্যক্তি ব্যাগটি তাঁকে (বিচারক) দিতে বলে যান।
নীলুফার শিরিন তাঁর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ব্যাগটি খুলে তিনি দেখতে পান ভেতরে দুটি খাকি রঙের খাম। একটিতে একটি মামলার যাবতীয় কাগজপত্র, অন্য খামে ৫০০ টাকার নোটের একটি বান্ডিল। তিনি টাকা গুনে দেখেননি। তবে অনুমানের ভিত্তিতে বোঝা যায়, এতে ৫০ হাজার টাকা আছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মামলাটির বিষয়ে তিনি (পিপি) আরও দুই দিন আগে থেকে তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠান। যার কোনো উত্তর তিনি দেননি। ভেবেছিলেন উত্তর না পেলে তিনি (পিপি) থেমে যাবেন। কিন্তু এভাবে ঘুষ পাঠানোতে তিনি মানসিকভাবে অত্যন্ত অপমানিত ও তীব্র রাগবোধ করেন।
জেলা বারের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি ও জেলা জজের সরকারি কৌঁসুলিকে প্যাকেটটি দেখিয়েছেন উল্লেখ করে বিচারক আরও লেখেন, এর আগেও পিপি রুহুল আমিন তাঁর কাছে বিভিন্ন সময় আসামিপক্ষে তদবির করেছে। তাঁর মনমতো আদেশ না হলে তিনি আদালতে সাংবাদিক ডেকে আনেন। এ ছাড়া পটুয়াখালীতে আলোচিত জুলাই শহীদের মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায়ও তিনি (পিপি) আসামিপক্ষ যোগাযোগ করেন বলে জানা যায়।
অবশ্য বিচারককে টাকা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রুহুল আমিন সিকদার।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মো. সালাহউদ্দীন বলেন, এ ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতি বৃহস্পতিবার জরুরি সভা করে। এতে রুহুল আমিনের সদস্য পদ সাময়িক স্থগিত করা হয় এবং তাঁকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির এ সিদ্ধান্ত ঢাকা বার কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠানোর কথা জানান তিনি।