শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ময়মনসিংহ নগরের টাউন হল মোড় এলাকায় সর্বাত্মক অবরোধ। রোববার বিকেলে
শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ময়মনসিংহ নগরের টাউন হল মোড় এলাকায় সর্বাত্মক অবরোধ। রোববার বিকেলে

শহীদ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে ময়মনসিংহে সর্বাত্মক অবরোধ

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ময়মনসিংহে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে রোববার বেলা আড়াইটার দিকে নগরের টাউন হল এলাকায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে বিকেল সোয়া চারটা থেকে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এতে সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ময়মনসিংহে ইনকিলাব মঞ্চের কোনো কমিটি না থাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ব্যক্তিরা ছাড়াও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও খেলাফত মজলিসের নেতারা কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ সময় ‘বিচার বিচার বিচার চাই, হাদি হত্যার বিচার চাই’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমরা সবাই হাদি হব, যুগে যুগে লড়ে যাব’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মাহদি হাসান বলেন, ‘শহীদ হাদি ভাই আমাদের জুলাইয়ের প্রকৃত ইমাম। তিনিই আগামীর বাংলাদেশের পথপ্রদর্শক। আমাদের ভাইয়ের বিচারের কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ আমরা প্রশাসন বা সরকার থেকে পাইনি। আমরা আমাদের ভাইয়ের বিচারের জন্য যা যা করা প্রয়োজন, তা–ই করব। রক্তের শেষ বিন্দু দিয়ে হলেও আমার ভাইয়ের বিচার আমরা আদায় করব ইনশা আল্লাহ। এটাই হবে ইনসাফ।’

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মমিনুর রহমান বলেন, ‘হাদি ভাইয়ের কথা ছিল সীমান্ত শক্তিশালী করার কথা। প্রয়োজনে ঘাস খেয়ে অস্ত্র বানাতে বলতেন। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের জন্য লড়ব। যত দিন দেহে প্রাণ আছে, তত দিন আমাদের সাম্য ও ন্যায়ের জন্য আন্দোলন চলবে।’ তিনি বলেন, শুধু ফয়সাল ও আলমগীর এ হত্যাকাণ্ডের জড়িত নয়, এ হত্যাকাণ্ডে অর্থের জোগানদাতা, পরিকল্পনাকারী, সহযোগী—সবাইকে শাস্তি দিতে হবে।

নাগরিক সংগঠন ময়মনসিংহ ফোরামের কো-অর্ডিনেটর সাঈদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য হলো ওসমান হাদির হত্যার বিচার নিশ্চিত করা। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশপন্থী অ্যাকটিভিস্ট ও বিপ্লবীদের হত্যা ও চরিত্রহননের মাধ্যমে মূলত অভ্যুত্থানকেই ব্যর্থ করতে চাইছে ফ্যাসিস্টদের ল্যাসপেন্সাররা। তারা চাইছে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে কার্যত বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে। তারা চায় নির্বাচন বানচালের মাধ্যমে এখানে পরাশক্তির হস্তক্ষেপ। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ওসমান হাদি কেবল একটি নাম নয়, একটি আদর্শের নাম। তাকে হত্যার মাধ্যমে ইনকিলাবের এই চেতনাকে বিলীন করা যাবে না।’

কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, মহানগরের আহ্বায়ক অলিউল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক হানজালা রহমান, মাহবুবা আক্তার, ময়মনসিংহ ফোরামের সদস্য হাসনাইন সাকিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহানগরের সহসাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত, এনসিপির জেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য ইকরাম এলাহী খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।