তিন দফা দাবিতে গতকাল রোববার রাতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মশালমিছিল করেন
তিন দফা দাবিতে গতকাল রোববার রাতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মশালমিছিল করেন

চাকরিতে কোটা সংস্কারসহ তিন দফা দাবিতে কুয়েটে শিক্ষার্থীদের মশালমিছিল

বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে তিন দফা দাবিতে মশালমিছিল ও সমাবেশ করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে কুয়েটের মিলনায়তনের সামনে থেকে তাঁরা মশালসহ বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘কোটা না মেধা, মেধা, মেধা’, ‘কোটার নামে বৈষম্য, চলবে না, চলবে না’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, কোটাপ্রথার সংস্কার’,’ এক, দুই, তিন, চার ডিপ্লোমা তুই কোটা ছাড়’, ‘ ইঞ্জিনিয়ার বানান কর, চাকরির দাবি পরে কর’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

এর আগে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা বলেন, প্রকৌশল সেক্টরে বৈষম্য তৈরি করে ডিপ্লোমাধারীদের অযৌক্তিকভাবে কোটা প্রদানের সুযোগ রাখা যাবে না। এই বৈষম্য দূর করা গেলে প্রকৌশল পেশায় মেধাভিত্তিক নিয়োগ ও পদোন্নতি নিশ্চিত হবে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো নবম গ্রেড (সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ)—এই পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে সমানভাবে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে এবং ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি হতে হবে। কোনোভাবেই কোটার মাধ্যমে পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।  দশম গ্রেড (উপসহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ) ডিপ্লোমাদের জন্য বরাদ্দ করা ১০০ শতাংশ কোটা বাতিল করতে হবে। এই পদে ন্যূনতম যোগ্যতা হবে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং, তবে উচ্চতর যোগ্যতাসম্পন্ন বিএসসি বা এমএসসি ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করতে পারবে। শুধু বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরাই নামের পাশে ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য কেউ এই পদবি ব্যবহার করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ইকরামুল ইসলাম বলেন, ‘কোটার বিপক্ষে ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে অনেকেই প্রাণ দিয়েছেন; কিন্তু এখনো অন্যায়ভাবে কোটা বহাল রাখা হয়েছে। আমরা টানা ছয় মাস ন্যায্য আন্দোলন করেছি, তবুও সরকার আমাদের দাবি উপেক্ষা করছে। আমরা শান্ত আছি, তবে আমাদের অশান্ত করবেন না। আমাদের মেধার যথাযথ মূল্যায়ন করুন।’

এ সময় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, ডিপ্লোমা সিন্ডিকেট ২০১৩ সালে সরকারকে বাধ্য করে কোটা–পদ্ধতি চালু করেছে, যা প্রকৌশল শিক্ষা ও ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। দেশের উন্নয়নও এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আজ প্রকৌশল সেক্টরে কোটা–পদ্ধতি চালুর ফলে যোগ্য ও মেধাবীরা সুযোগ পাচ্ছে না। এ জন্য তিনি বিভিন্ন প্রকৌশলপ্রধানদের এ বিষয়ে সরব হওয়ার আহ্বান জানান।

পরে শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।