নবীনগর আ.লীগের সম্মেলন

শীর্ষ দুই পদের মধ্যে সভাপতি নিয়েই চলছে বেশি আলোচনা

২৭ নভেম্বর নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ওই সম্মেলন হওয়ার কথা। সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।

  • উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান এবং সংসদ সদস্য এবাদুল করিমের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে।

  • তাঁদের বাইরেও উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেকটি পক্ষও রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

প্রায় সাড়ে আট বছর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে। ২৭ নভেম্বর নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ওই সম্মেলন হওয়ার কথা। সম্মেলন ঘিরে উপজেলাজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।

শীর্ষ দুই পদে কারা আসছেন, তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন-সমীকরণ। তবে শীর্ষ দুই পদের মধ্যে সভাপতি নিয়েই চলছে বেশি আলোচনা।

নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে একাধিক বিভক্তি রয়েছে। বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান এবং বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিমের মধ্যে নীরব দ্বন্দ্ব ও দূরত্ব রয়েছে। তাঁদের বাইরেও উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেকটি পক্ষও রয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৬ জুন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সম্মেলনে ফয়জুর রহমান সভাপতি এবং এম এ হালিমকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে তাঁরা ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি পদে ফয়জুর রহমান ও এবাদুল করিমের নাম আলোচনায় রয়েছে। তাঁদের অনুসারীরা এই দুই শীর্ষ নেতাকে সভাপতি পদে দেখতে চান বলে উপজেলাজুড়ে পৃথক পৃথক ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে হালিম, নবীনগর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক শিব শংকর দাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুজিত কুমার দেব, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য গোলাম শাহরিয়ারের নাম শোনা যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে জনপ্রিয়তা, সামাজিক কাজকর্ম, নিয়মিত দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তা ও গ্রহণযোগ্যতার কারণে শিব শংকর দাসের সম্পাদক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

দলের মধ্যে বিভক্তি প্রসঙ্গে হালিম বলেন, ‘অনেক কষ্ট, সময় দিয়ে দলটা এখানে এনেছি। ২৭ নভেম্বর সম্মেলনের দিন পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেই হয়। প্রকাশ্যে কোনো বিভক্তি নেই। কারণ, আমরা প্রকাশ্যে খাচ্ছি ও সভা করছি। তবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভেতরে ভেতরে একটা দূরত্ব রয়েছে।’

দলীয় সূত্র জানা গেছে, গত ২১ মে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তখন উপজেলার শীর্ষ দুই নেতার উপস্থিতিতে বর্ধিত সভা হয়। সভার সিদ্ধান্তে দলের সাধারণ সম্পাদক হালিমকে আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলার ডাকবাংলোয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ। উপজেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর সহসভাপতি নিয়াজ মোহাম্মদ খানকে আহ্বায়ক করে ৩৩ সদস্যের পাল্টা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন তাঁরা।

সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোর্শেদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী জাকির আহাম্মদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।