
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে টানা দুই দিন ধরে দীর্ঘ যানজট লেগে আছে। জেলার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে খড়িয়ালা সরাইল বিশ্বরোড মোড় ও কুট্টাপাড়া মোড় হয়ে বাড়িউরা এলাকা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকায় গতকাল সোমবার ভোর থেকে এ যানজট তৈরি হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার রাত আটটা থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট ছিল। সরাইল বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বর, সরাইল উপজেলার শান্তিনগর ও আশুগঞ্জ গোলচত্বরে বড় বড় গর্তের কারণে যানজট লেগে থাকছে।
পুলিশ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেন করার কাজ চলছে সাত থেকে আট বছর ধরে। কাজটি করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ভারতীয় ঋণে চলা প্রকল্পটির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা কাজ ফেলে দেশে ফিরে যান। তিন মাস পর ফিরে তাঁরা আবার কাজ শুরু করেন। তবে কাজ চলছে ধীরগতিতে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সরাইল বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বর এলাকায় ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। তিন মাসে ইট-বালু দিয়ে এসব গর্ত একাধিকবার ভরাট করা হলেও বৃষ্টির কারণে টেকেনি। সর্বশেষ গত শনিবার ইট-বালু দিয়ে ভরাট করা হয়। আজ সেই গর্ত আবার তৈরি হয়েছে। ইট-বালুর মিশ্রণে বিশ্বরোড মোড়ের তিন পাশে কাদাপানির সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে ছোট ছোট যানবাহন আটকে যাচ্ছে। এতে জেলার অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার যানবাহনের যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
ঢাকা থেকে সিলেটগামী পণ্যবাহী ট্রাকচালক আল আমীন প্রথম আলোকে বলেন, আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে বিশ্বরোড মোড়ে আসতে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগছে। বাধ্য হয়ে এই এলাকা দিয়ে যেতে হয়। তাঁদের দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।
মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে সরাইল থানার পুলিশ ও সরাইলের খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার পুলিশ। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি হলেই সরাইল বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বর এলাকা যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এখানে এসে সব যানবাহন আটকে যাচ্ছে। স্থায়ীভাবে গর্ত ভরাট না করা হলে যানজটমুক্ত হওয়া কঠিন। এরপরও হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁরাও যানজট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।