জুমার নামাজের পর চাকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মসজিদের সামনে
জুমার নামাজের পর চাকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মসজিদের সামনে

চাকসু নির্বাচন

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, তবু থেমে নেই প্রচারণা

শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা হয়েছে। তবে থেমে নেই চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণা আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর ক্যাম্পাসে প্রার্থীরা প্রচারণায় মেতে ওঠেন।

আজ বিজ্ঞান অনুষদের মসজিদে নামাজ আদায় করেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা। মসজিদটি চাকসু ভবনের পাশেই। পরে নামাজ শেষে প্রার্থীরা একত্র হয়ে কুশল বিনিময় করেন। শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট চান।

ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘সম্প্রীতি শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সাইদ বিন হাবিব, ছাত্রদলের প্যানেলের জিএস প্রার্থী মো. শাফায়াত হোসেন, ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র মজলিস–সমর্থিত ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তামজিদ উদ্দিন ও ‘সর্বজনীন ছাত্র ঐক্য পরিষদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাঈদ মো. রেদোয়ান নামাজ শেষে কুশল বিনিময় করেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট চান।

ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল জিএস প্রার্থী সাইদ বিন হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট ও দোয়া চাইছি। শিক্ষার্থীরা দারুণভাবে সাড়া দিচ্ছে। গতকাল প্যানেলের অনেকেই একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছি।’

ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী শাফায়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত। আমরা প্যানেল নিয়ে ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর দুয়ারে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তাঁদের আশ্বস্ত করছি।’

আগামী ১৫ অক্টোবর চাকসুর সপ্তম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার ভোটার ২৭ হাজার ৫২১ জন। নির্বাচনে লড়তে ১৩টি প্যানেল করেছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। এসব প্যানেলের মধ্যে লড়াই জমে উঠবে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, সংগঠন ও প্রার্থীদের অতীত ইতিহাস, বর্তমান কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিশ্লেষণ করে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। কোনো সংগঠনের নামে ভোট পড়বে না।

ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান জুবাইর প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এর পর থেকে ক্যাম্পাসের পরিবেশ পাল্টে যায়। এখন অনেক সংগঠনই স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা আগে দেখা যায়নি। এখন সুষ্ঠু ভোটের অপেক্ষা।

এক প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

১৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে ‘রেভল্যুশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি’ নামের একটি প্যানেল। প্যানেলটি ‘বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্ট’–সমর্থিত।

আজ চাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের শাখা সভাপতি জুয়েনা সুলতানা। আর যৌথভাবে ইশতেহার উপস্থাপন করেন প্যানেলের ভিপি প্রার্থী কেফায়েত উল্লাহ ও জিএস প্রার্থী কাজী শাহরিয়ার উল্লাহ। তাঁরা বলেন, দলীয় আধিপত্যমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তোলা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করাই তাঁদের মূল অঙ্গীকার।

১৭ দফা ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে, অনলাইন ভোটিং সিস্টেম চালু, নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পূর্ণ ডেটাবেজ তৈরি ও সব প্রশাসনিক কার্যক্রম অনলাইনভিত্তিক করা, গুপ্ত রাজনীতি বিলুপ্ত করে বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একাডেমিক রাজনীতি চালু, অভিযোগ-পরামর্শের জন্য ‘অভিযোগ সেল’ গঠন।