কনকনে শীতে মাফলার জড়িয়ে ঘর থেকে বের হয়েছেন কর্মজীবী মানুষ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন এলাকায়
কনকনে শীতে মাফলার জড়িয়ে ঘর থেকে বের হয়েছেন কর্মজীবী মানুষ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন এলাকায়

চট্টগ্রামে কনকনে শীতে জবুথবু জনজীবন

চট্টগ্রাম আজ যেন কুয়াশার চাদরে মোড়া এক শহর। ভোর থেকেই চারদিক ধূসর। আকাশে সূর্যের দেখা মেলে বেশ দেরিতে। কনকনে শীতে কাঁপছে জনজীবন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ চট্টগ্রামের তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রামে আগামী কয়েক দিন সকাল ও রাতের দিকে কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা বজায় থাকতে পারে।

আজ সকালে ঘুম ভাঙতেই অনেকেই টের পেয়েছেন শীতের তীব্রতা। তাই ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ভরসা করতে হয়েছে গরম কাপড়ের ওপর। রাস্তায় নেমে দেখা গেছে, কুয়াশায় ঝাপসা হয়ে আছে দূরের ভবন, গাছপালা। কুয়াশার কারণে ভোরের দিকে যানবাহন চলাচলে ছিল ধীরগতি। মোটরসাইকেল আর রিকশাচালকদের মুখে মুখে শীতের ভোগান্তির আলাপ।

নগরের বিভিন্ন এলাকায় খেটে খাওয়া মানুষের কষ্ট যেন আরও স্পষ্ট। ভাসমান শ্রমিক, পথশিশু ও দিনমজুরেরা শীতের সঙ্গে লড়াই করছেন খোলা আকাশের নিচে। কেউ জড়ো হয়েছেন আগুন জ্বালিয়ে, কেউ আবার পুরোনো কম্বলের ভেতর গুটিসুটি মেরে বসে আছেন। শীত তাঁদের কাছে যেন শুধু ঋতু নয়, প্রতিদিনের সংগ্রাম।

শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, এ বছর শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। আগের দিনের তুলনায় কুয়াশা আজ বেশি ঘন। সূর্যের আলো না থাকায় ঠান্ডা যেন গায়ে আরও বেশি লাগছে।

শীতের প্রভাব বাড়ার কারণ হিসেবে উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের কথা বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, এ বলয়ের প্রভাবে দেশে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। এ বলয়ের বর্ধিতাংশ এখন পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অলক পাল প্রথম আলোকে বলেন, উত্তরবঙ্গে চেয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলে শীতের প্রভাব কম। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘন কুয়াশার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতা বৃদ্ধি, বাতাসের গতিপথে পরিবর্তন ও উত্তর দিকের শীতল বায়ুর প্রবাহ একসঙ্গে কাজ করায় এ কুয়াশাচ্ছন্ন ও ঠান্ডা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সূর্যের আলো বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দিনের বেলাতেও শীতের অনুভূতি থেকে যাচ্ছে।

অধ্যাপক অলক পাল আরও বলেন, এ ধরনের আবহাওয়া সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষের ওপর। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য এটি ভোগান্তি তৈরি করতে পারে।