
ঢাকায় আলোচিত আশরাফুল হক হত্যা মামলার দ্রুত বিচার ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রংপুরের বদরগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। আজ রোববার বিকেলে উপজেলার গোপালপুর হাটে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
আশরাফুল হকের বাড়ি বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর নয়াপাড়া গ্রামে। ১১ নভেম্বর মালয়েশিয়াফেরত বন্ধু জরেজুল ইসলামের সঙ্গে তিনি ঢাকায় যান। ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর হাইকোর্ট-সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের পাশে একটি ড্রাম থেকে তাঁর ২৬ টুকরা খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ১৪ নভেম্বর আশরাফুলের বোন আনজিরা বেগম শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরে মামলায় প্রধান আসামি জরেজুল ও এক নারীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আজ আশরাফুলের বাড়ির পাশে গোপালপুর হাটে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে গ্রামবাসী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। মানববন্ধনে গোপালপুর নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, গ্রামের বাসিন্দা আশিকুর রহমান, আবেদ আলী, এনামুল হক, নিহত আশরাফুলের বাবা আবদুর রশিদ, মা এছরা বেগম, স্ত্রী লাকী বেগম, বোন আনজিরা বেগমসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।
শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘২৬ টুকরা করে একজন মানুষকে হত্যা করার মতো নৃশংসতা এই এলাকায় কখনো দেখা যায়নি। এমন বর্বর হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত না হলে মানুষের আইনের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে যাবে।’
আশরাফুলের বাবা আবদুর রশিদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলেটা কিছুদিন আগেও আমার হাসপাতালের বেডে দাঁড়িয়ে ছিল। সেখানে জরেজ খুব তাগাদা দিচ্ছিল ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। সে পরিকল্পনা করে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি বেঁচে থাকতে ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই।’
মা এছরা বেগম বলেন, ‘আমার বেটাক ডেকে নিয়ে এমনভাবে কেন মারল? আমার বুকটা খালি হয়ে গেল। হত্যার বিচার না হলে আমরা কেউ শান্তি পাব না।’
স্ত্রী লাকি বেগম আহাজারি করে বলেন, ‘জরেজ বলেছিল, আশরাফুল ব্যস্ত, পরে কথা হবে। পরে আর কথা হয়নি, লাশ হয়েছে। জরেজ পরিকল্পনা করে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। এখন আমার স্বামীর চরিত্র নিয়ে টানাটানি করছে, অসত্য তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তিনি সৎ ব্যবসায়ী ছিলেন। এলাকার মানুষ সবাই জানে।’
মানববন্ধন থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।