
রাজনৈতিক সংস্কৃতি না বদলালে শত সংস্কার করেও তা কোনো কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ১০ জন বিজ্ঞ ব্যক্তি বসে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে না। তাদের সেই দায়িত্ব কেউ দেয়নি। তিনি দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি জানান।
বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম নগরের এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে আজ রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ স্থিতিশীলতা চায়। কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী পেশাজীবী থেকে শুরু করে সবাই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় বিএনপি ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, ‘শত সংস্কার করেন, হাজার সংস্কার করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে যদি রাজনৈতিক চরিত্র ও সংস্কৃতি না বদলায়, কোনো কাজ হবে না। সুতরাং বিএনপি সেই কাজটা করছে, তারেক রহমান সেই কাজটা করছে। আমাদের সবাইকে সে কাজটাই করতে হবে—ঠান্ডা মাথায়। রাজনীতিতে মাথা গরম হলে আপনি হেরে গেছেন। মাথা গরম করা যাবে না।’
রাজনীতিবিদেরাই দেশের মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পারেন মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ঢাকা শহরে ১০ জন বিজ্ঞ ব্যক্তি বসে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে না। তাদের সেই দায়িত্ব কেউ দেয়নি। কোনো কমিশনই মানুষের মনের ভাষা বুঝবে না। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এই পরিবর্তন হবে টেকসই। নতুন বাংলাদেশ গড়ার।
আমীর খসরু বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষের মনোজগতে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। সেটা ধারণ করতে না পারলে কোনো দল রাজনীতি করতে পারবে না। আমরাও যদি ধারণ করতে না পারি, তাহলে সামনে পথ চলা কঠিন হবে।’ তিনি বলেন, কারও বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করলেও সম্মান দেখাতে হবে।
সম্প্রতি বিএনপির বিরুদ্ধে অনেক কিছুই হচ্ছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমানও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন না। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনীতি হবে সহনশীল। দেশের জনগণই তাদের জবাব দেবে।’
জামায়াত ও এনসিপিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এখন তারা বলছে, নির্বাচনেরও দরকার নেই! শেখ হাসিনা তো ‘আমি-ডামি’ বলে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে। আর তারা বলছে, নির্বাচনের দরকার নেই। আমীর খসরু প্রশ্ন তোলেন, তারা কি আসলে কোনো রাজনৈতিক দল হিসেবে গণ্য হতে পারে? তারা কি গণতন্ত্রের বিপক্ষে শক্তি নয়? তারা কি জনগণের মালিকানা ফিরে পাওয়ার বিপক্ষের শক্তি নয়?
প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমান সম্পর্কে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মাটি থেকে উঠে আসা একজন রাজনীতিবিদ আবদুল্লাহ আল নোমান। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন। তাঁদের সুখে–দুঃখে ছিলেন সব সময়।
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব নাজিমুর রহমানের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু প্রমুখ।