রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক নেতাকে সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামকে মারধর করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের হৃদয় গাজী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনার বিচার দাবিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সিদ্ধান্তে উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যের নির্দেশে হৃদয় গাজীকে একাডেমিক কার্যক্রমে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়, যা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-১–এ সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশের সঙ্গে প্রক্টরিয়াল বডির কথোপকথন চলছিল। সে সময় পাশেই চিৎকারের শব্দ শোনা যায়। পরে আমরা জানতে পারলাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে পেটানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিচারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি প্রাথমিকভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’
এ ছাড়া হৃদয় গাজীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌর শহরের হাজির পাড়া রামবাড়ি এলাকায় তুচ্ছ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসিন ইখতিদার ওরফে নিপুনকে মারধর করে বহিরাগত এক যুবক। বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পুলিশ বুধবার দুপুরে ঘটনায় জড়িত এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে প্রশাসনিক ভবন–১–এ তালা ঝুলিয়ে দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-১-এ গেলে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। পরে রাত আটটার দিকে তালা খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী একাডেমিক ভবন–১–এ ফিরে আসেন। এ সময় ফেসবুকে শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের বিষয়টি ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চাইতে রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে কথা বলে। এ সময় অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-১–এর পাশে জাহিদুল ইসলামকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম আলী এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে বহিরাগত এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরবর্তী ঘটনা শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ। এ বিষয়ে আমার অবগত নই।’