
শিক্ষকের ৩১টি পদ খালি রয়েছে দুই থেকে পাঁচ বছর ধরে। শিক্ষকসংকটের কারণে কলেজটিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে শিক্ষকের পদ রয়েছে ৭৬টি। এর বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ৪৫ জন। শিক্ষকের ৩১টি পদ খালি রয়েছে দুই থেকে পাঁচ বছর ধরে। শিক্ষকসংকটের কারণে কলেজটিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
কলেজটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঠিকমতো ক্লাসে পাঠদান না হওয়ায় তাঁদের কোচিংনির্ভর হয়ে পড়তে হচ্ছে। সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাঁচজন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কলেজে বাংলাসহ ১১টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু থাকলেও অধিকাংশ বিভাগেই রয়েছে শিক্ষকসংকট। বাংলা বিভাগে অনুমোদিত চারটি পদের বিপরীতে মাত্র একজন শিক্ষক রয়েছেন। তিনিই স্নাতকসহ (সম্মান) সব শ্রেণির বাংলা বিষয়ে ক্লাস নেন।
কলেজসূত্রে জানা গেছে, কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে একজন শিক্ষকও নেই। পাঁচ বছর ধরে এ বিষয়ে শিক্ষকের দুটি পদই শূন্য। একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েই উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতকের শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে পাঠদান করা হচ্ছে।
কলেজে বাংলাসহ ১১টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু থাকলেও অধিকাংশ বিভাগেই রয়েছে শিক্ষকসংকট। বাংলা বিভাগে অনুমোদিত চারটি পদের বিপরীতে মাত্র একজন শিক্ষক রয়েছেন। তিনিই স্নাতকসহ (সম্মান) সব শ্রেণির বাংলা বিষয়ে ক্লাস নেন।
একই ভাবে দর্শন বিভাগে তিনজন শিক্ষকের বিপরীতে একজন, সমাজকর্ম বিভাগে তিনজনের বিপরীতে একজন, রসায়ন বিভাগে চারজনের বিপরীতে দুজন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে সাতজনের বিপরীতে চারজন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, কলেজে রয়েছে ছয়টি ভবন। এসব ভবনে থাকা শ্রেণিকক্ষের কোনোটিতে ক্লাস হচ্ছে, কোনোটিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকলেও শিক্ষক নেই। কলেজের মাঠে আড্ডা দিতে দেখা যায় কিছু শিক্ষার্থীকে।
শিক্ষকসংকট নিরসনের বিষয়ে আবেদন-নিবেদন, মানববন্ধন—কোনোটাই বাদ রাখিনি। তবু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শিক্ষকসংকটের মধ্যেই কলেজের পাঠদান চলছে।মামুনুর রশিদ, শিক্ষার্থী, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ
জাকির হোসেন নামের একজন জানান, তিনি বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। তাঁর বিভাগে নিয়মিত ক্লাস হয় না। বাজারের গাইড বই ও নোট সংগ্রহ করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। পরীক্ষার সময় ঘনিয়ে এলেই তাঁদের উদ্বেগ বেড়ে যায়।
স্নাতকের (পাস) আরেক শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘শিক্ষকসংকট নিরসনের বিষয়ে আবেদন-নিবেদন, মানববন্ধন—কোনোটাই বাদ রাখিনি। তবু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শিক্ষকসংকটের মধ্যেই কলেজের পাঠদান চলছে।’
শিক্ষকেরা জানান, কলেজের শিক্ষকসংকটের বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও শূন্য পদে শিক্ষক পদায়নের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মঞ্জুরুর রহমান বলেন, ‘প্রতি মাসেই এ বিষয়ে চিঠি দিচ্ছি। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে গিয়েও সংকটের বিষয়টি জানিয়েছি, তবু সমস্যার সমাধান হয়নি। সংকটের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান যাতে ব্যাহত না হয়, সেই চেষ্টায় করা হয়।’