Thank you for trying Sticky AMP!!

কৃতী শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর কক্সবাজারের বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি

কক্সবাজারে কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনায় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের একাংশ। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার শহরের বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি প্রাঙ্গণে

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে সাড়ে সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি প্রাঙ্গণ। সেখানে আয়োজন করা হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। এ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে নানা আয়োজন।

আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের মূল আয়োজন। এর আগে থেকেই সেখানে জড়ো হতে শুরু করে কৃতী শিক্ষার্থীরা। সংবর্ধনার নিবন্ধনের কার্ড নিয়ে সারিবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীরা বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমির মাঠের উত্তর পাশের স্টল থেকে ক্রেস্ট আর নাশতা সংগ্রহ করে।

সকালে আকাশে মেঘের ঘনঘটা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেঘ ভেদ করে বেরিয়ে আসে শরতের সূর্য। সকাল ১০টার দিকে প্রাঙ্গণজুড়ে ঝলমলে রোদ। এ সময় আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। সহপাঠীরা একে অপরকে দেখে জড়িয়ে ধরে কুশল বিনিময় করছিল। কেউ আড্ডায় মশগুল হয়ে পড়ে। আর কেউবা মাঠের দক্ষিণ অংশে সেলফি জোনে ব্যস্ত ছিল ছবি তোলায়। অভিভাবকদেরও উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সময় পুরো মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল।

সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের উৎসবটি পাওয়ার্ড বাই ‘বিকাশ’। সহযোগিতা করছে কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা। কক্সবাজারের উৎসবে অংশ নিতে বিভিন্ন উপজেলার জিপিএ-৫ পাওয়া ৭৮১ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে।

৭০ কিলোমিটার দূর থেকে উৎসব প্রাঙ্গণে হাজির হয়েছে পেকুয়া সরকারি মডেল জিএমসি ইনস্টিটিউশন থেকে জিপিএ–৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থী সৈয়দা সায়মা ফেরদৌসী। সায়মা বলে, ‘দীর্ঘদিন পর বড় পরিসরে কোনো অনুষ্ঠানে এসেছি। দেখা হচ্ছে বন্ধুদের সঙ্গে। লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে এলেও অনেক দিন পর বন্ধুদের একত্র পেয়ে সব ক্লান্তি ভুলে গেছি। অনেক ভালো লাগছে। ধন্যবাদ আয়োজকদের।’ কৃতী শিক্ষার্থী সৈয়দা সায়মার সঙ্গে এসেছেন তার বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ আবু মুছা ও মা ফাতেমা জান্নাতও। তাঁরা মেয়ের সঙ্গে, মেয়ের বন্ধুদের সঙ্গে সেলফি জোনে সেলফি তুলছেন। সেলফি তুলতে তুলতে সৈয়দ মোহাম্মদ আবু মুছা বলেন, ‘মেয়ে জিপিএ–৫ পেয়েছে। সেই আনন্দ পরিবারের সবার। প্রথম আলো বড় পরিসরে আনন্দ ভাগাভাগির সুযোগ করে দিয়েছে।’

কক্সবাজারে কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনায় সেলফি জোনে অভিভাবকদের সঙ্গে সেলফি তুলছে শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি প্রাঙ্গণে

চকরিয়া উপজেলা সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল হুদা ও তাঁর স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন এসেছেন জিপিএ–৫ পাওয়া দুই মেয়েকে নিয়ে। একসঙ্গে দুই মেয়ে জিপিএ–৫ পাওয়ায় তাঁদের মধ্যে খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছে। চকরিয়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ–৫ পাওয়া তাঁদের দুই মেয়ে ফারিয়া হুদা ও ফৌজিয়া হুদা বলে, ‘দুই বোন একসঙ্গে কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করেছি। মা–বাবাকে সঙ্গে নিয়ে দুজনেই একসঙ্গে অনুষ্ঠানে এসেছি। এমন একটি অনুষ্ঠানে আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আমাদের সঙ্গে মা–বাবাও অনুষ্ঠান উপভোগ করছে।’

সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ক্রেস্ট, অনলাইনে সার্টিফিকেট, প্রথম আলো ই-পেপার (১ মাস) ও চরকির (১৫ দিন) ফ্রি সাবস্ক্রিপশন, শিখোর সৌজন্যে বিনা মূল্যে কোর্স, ফ্রেশ ব্র্যান্ডের স্ন্যাকস। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর কক্সবাজারের নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুল কুদ্দুস ও ফ্রেশ কোম্পানির জেলা বিক্রয় ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহজাহান সিরাজ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছেন কক্সবাজার সিটি কলেজ বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম নাঈম।

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা দিতে উৎসব প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়েছেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক কবি ও সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কক্সবাজার উত্তরণ মডেল কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ফজলুল করিম চৌধুরী, কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. সোলাইমান, কক্সবাজার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন,  কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. ছৈয়দ করিম, কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন ও কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদা মোর্শেদা আইভি।