প্রকৃতির সঙ্গে মিশে একাকার ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী মসজিদে নূর জামে মসজিদ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন অসংখ্য দর্শনার্থী। সম্প্রতি জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা শহরের দড়িপাড়া এলাকায়
প্রকৃতির সঙ্গে মিশে একাকার ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী মসজিদে নূর জামে মসজিদ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন অসংখ্য দর্শনার্থী। সম্প্রতি জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা শহরের দড়িপাড়া এলাকায়

জামালপুরে দৃষ্টিনন্দন ‘মসজিদে নূর’ দেখতে মানুষের ভিড়

চারদিকে ফসলের মাঠ। এর আশপাশে মিতালি গড়েছে গাছগাছালি। এমন মনোরম আবহের মাঝখানে গড়ে তোলা হয়েছে ‘মসজিদে নূর’ জামে মসজিদ। তিন দরজাবিশিষ্ট দুই তলা মসজিদটি মার্বেল পাথরের অবকাঠামোর তৈরি। ছাদের চারপাশে পিলারের ওপর সাতটি গম্বুজসহ চারটি বড় মিনার। জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা শহরের প্রবেশপথে চোখে পড়বে মসজিদটি।

তুরস্কের আদলে কারুকার্যমণ্ডিত এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় আড়াই হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। জামালপুর-বকশীগঞ্জ সড়ক–সংলগ্ন বকশীগঞ্জ শহরের দড়িপাড়া এলাকায় আধুনিক স্থাপত্যে গড়ে তোলা হয়েছে এই মসজিদ। মসজিদের স্থাপত্যশৈলী দেখতে সেখানে প্রতিদিনই ভিড় করেন অসংখ্য দর্শনার্থী।

সম্প্রতি মসজিদে নূর–সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা শহরগামী প্রধান সড়কের ডান পাশে আরেকটি পাকা সড়ক চলে গেছে। সেটি ধরে ৫০০ মিটার এগোলেই চোখে পড়ে নয়নাভিরাম মসজিদটি। এর চারপাশে সবুজ সমারোহ। আঙিনায় সারিবদ্ধ ঝাউগাছসহ মসজিদের চারপাশে আছে হরেক ফুলের বাগান। ডান পাশে একটি দৃষ্টিনন্দন অজুখানা আছে। এর ঠিক সামনেই বিশাল একটি মাঠ। সেখানে নিয়মিত খেলাধুলা করে স্থানীয় কিশোর, তরুণ ও যুবকেরা।

মসজিদের ভেতরে ঢুকতেই নজর কাড়ে কারুকাজ। মেঝেতে ব্যবহৃত হয়েছে মার্বেল পাথর। সম্পূর্ণ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত দ্বিতল মসজিদের সিলিংয়ে ঝুলছে দৃষ্টিনন্দন ঝাড়বাতি। এ ছাড়া মসজিদের মূল চত্বরের পবিত্রতা রক্ষার্থে চারপাশে নির্মিত হয়েছে দেয়াল।

তুরস্কের আদলে কারুকার্যমণ্ডিত এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় আড়াই হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন

নির্মাতা ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ মে জুমার নামাজের মাধ্যমে মসজিদটি মুসল্লিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পাঁচ একর জায়গাজুড়ে এটি নির্মিত হয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাহবুবুল হক নামের এক ব্যক্তি এটি নির্মাণ করেন।

জামালপুর শহরের জিগাতলা এলাকা থেকে মসজিদটি দেখতে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ কালাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘অনেকের কাছেই এ মসজিদের সৌন্দর্যের কথা শুনেছি। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগল মসজিদের মিনারগুলো।’

আঙিনায় সারিবদ্ধ ঝাউগাছসহ মসজিদের চারপাশে আছে হরেক ফুলের বাগান। ডান পাশে একটি দৃষ্টিনন্দন অজুখানা আছে। এর ঠিক সামনেই বিশাল একটি মাঠ

মসজিদের প্রাঙ্গণে কথা হয় বকশীগঞ্জ উপজেলা শহরের রমজান আলীর সঙ্গে। তিনি তাঁর সন্তানদের নিয়ে এটি দেখতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এত বড় জায়গা নিয়ে সুন্দর মসজিদটি জামালপুরের আর কোথাও নাই। মূলত এর স্থাপত্যশৈলী দেখতেই প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহে এর মতো সুন্দর মসজিদ আর নেই।’

মসজিদের ইমাম মো.বেলাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, মসজিদের ভেতরে, নিচে ও দোতলায় প্রায় আড়াই হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। ফুলের বাগানে ঘেরা এই মসজিদের পাশে বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা ও মাদ্রাসা আছে। এখন মুসল্লিদের মুখে মুখে মসজিদটির নাম ছড়িয়ে পড়েছে।