নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে কক্ষে বসেছেন নারী পরীক্ষার্থী। তাঁর জামার ভেতরে বিশেষ কৌশলে সেলাই করা ছিল একটি ডিভাইস, কানে ছিল আরেকটি। পরনে ছিল বোরখা। এসব তথ্য পেয়েছিল পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ওই পরীক্ষার্থী ওএমআর শিট পূরণ করেছেন সবেমাত্র। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর শরীর তল্লাশি করা হয়। আর তাতেই বেরিয়ে আসে ডিভাইস দুটি। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে নেওয়া হয় পুলিশি হেফাজতে।
এ ঘটনা আজ শনিবার সকালে দিনাজপুর সদর উপজেলায় পরজপুর ফাসিলাডাঙ্গা হাইস্কুলে। খাদ্য অধিদপ্তরের সহকারী উপ-খাদ্য পরিদর্শক পদের নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। চাকরিপ্রার্থী ওই নারীর নাম শিরিন আক্তার। তাঁর বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়। তাঁকে আটকের সময় দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জারিফ সুলতান, কেন্দ্রসচিব সালমা খাতুনসহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং ওই নারীর দেহ তল্লাশি করে ডিভাইস দুটি উদ্ধার করা হয়। গতকাল বিকেলে ওই নারী পরীক্ষা দিতে পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুরে আসেন। দিনাজপুর শহরের কালুর মোড় এলাকায় একটি মেসে ওঠেন। রাতেই প্রতারক চক্রের সদস্যরা তাঁকে ডিভাইস দুটি সরবরাহ করেন। নিয়োগপত্র হাতে পাওয়া পর্যন্ত প্রতারক চক্রের সঙ্গে ওই নারীর চুক্তি হয়েছে ১৫ লাখ টাকার। তবে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে বের হলেই অগ্রিম পরিশোধ করার কথা ছিল দুই লাখ টাকা।
এদিকে একই দিনে একই নিয়োগ পরীক্ষায় ‘প্রক্সি ’দিতে এসে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মিফতাহুল জান্নাত।
জেলা ডিবির উপপরিদর্শক আবদুল খায়ের বলেন, ‘আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তাঁরা কয়েকজনের নাম বলেছেন। সেই সূত্র ধরে আমরা পুরো চক্রটিকে ধরার চেষ্টা করছি। তাঁদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনে নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম হাবিবুল হাসান বলেন, ‘কিছুদিন আগেও দিনাজপুরে ডিভাইস নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ঘটনায় একটি চক্রের তিন সদস্যকে আমরা আটক করেছিলাম। তখন থেকেই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ দুটি চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কাজ করছে।’