
দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ফরিদা পারভীনকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। রোববার মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে মাউশিতে ওএসডি করা হয়। একই সঙ্গে কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে অধ্যাপক আশরাফুল ইসলামকে।
অধ্যক্ষ ফরিদা পারভীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলে সম্প্রতি আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘গায়েবি খাতে কোটি টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি কলেজ-২ শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব চৌধুরী সামিয়া ইয়াসমীন। বিভিন্ন কলেজের ৮ শিক্ষকের বদলি ও পদায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ওই প্রজ্ঞাপনে। ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাঁদের দায়িত্ব ছাড়তে বলা হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, অধ্যক্ষ ফরিদা পারভীন ১৯৯৩ সালে দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। ২০২০ সালে পদোন্নতি পেয়ে অধ্যাপক এবং ২০২২ সালের আগস্টে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। পাঁচ আগস্ট সরকার পতনের পরে তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ শিক্ষার্থী ও কর্মচারীকে হয়রানির অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ২০ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবরে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার আবেদন করেন ফরিদা পারভীন।
পরে কলেজের অন্য শিক্ষকেরা সর্বসম্মতিক্রমে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আশরাফুলকে সাময়িকভাবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। চলতি মাসের ১ তারিখে ফরিদা পারভীনের বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকদের নিয়ে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার পর্যন্ত আর্থিক অনিয়ম–সংক্রান্ত কমিটি প্রায় ১ কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছে বলে জানা যায়।
উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন হওয়া আশরাফুল ইসলাম কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক। ২০১৭ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে এ কলেজে যোগ দেন। গত বছর মার্চে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। মুঠোফোনে তিনি বলেন, অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পরেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে দায়িত্ব পান তিনি। তবে প্রেষণে এই কলেজে কর্মরত আছেন। রোববার সন্ধ্যায় কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়নের চিঠি পেয়েছেন।