
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আজ বুধবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় মাছ রপ্তানি করা যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট পারমিট (ইএক্সপি) হাতে না পাওয়ায় মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হয়নি।
আখাউড়া স্থলবন্দরের মৎস্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া মাছ রপ্তানি বন্ধ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মাছ রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইএক্সপির প্রয়োজন হয়। ওই কাগজপত্র মাছ ব্যবসায়ীদের হাতে না পৌঁছানোয় আজ ব্যবসায়ীরা ভারতে মাছ রপ্তানি করতে পারেননি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মাছ রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলবে।
রাজিব উদ্দিন ভূঁইয়া নামের এক রপ্তানিকারক বলেন, কাগজপত্রের জটিলতায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তাঁর মাছ রপ্তানি হয়নি।
এদিকে ভারত সরকার হঠাৎ বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে ৬টি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ভারতের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা পণ্যের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, সুতা ও সুতার উপজাত এবং আসবাব। এর মধ্যে তৈরি পোশাক ও কাঠের আসবাব ব্যতীত বাকি সব পণ্যই নিয়মিতভাবে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হতো। ভারতের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় আখাউড়া স্থলবন্দরে রপ্তানি কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দর দিয়ে ভারতে ৪২৭ কোটি ৮৮ লাখ ৭২ হাজার ৪৩০ টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। আর চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি হয় ৪৫৩ কোটি ১ লাখ ৯৬ হাজার ৭৯৩ টাকার পণ্য। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, প্লাস্টিক, ভোজ্যতেল, তুলা, প্রক্রিয়াজাত খাবার, মেলামাইন সামগ্রী ও শুঁটকি।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, হিমায়িত মাছের পর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় প্লাস্টিক পণ্য, পিভিসি সামগ্রী, চিপস, বিস্কুট, ফলের স্বাদযুক্ত জুস ও তুলা। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৪৫ লাখ টাকা মূল্যের এসব পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। ফলে এ পণ্যগুলো ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ায় আখাউড়া স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, আজ সকাল থেকে মাছের কোনো গাড়ি বন্দরে আসেনি। সিমেন্ট ও ভোজ্যতেল নিয়ে ১১টি গাড়ি বন্দরে প্রবেশ করেছে। যা আগরতলায় রপ্তানি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ৪০-৫০টি গাড়ি পণ্য রপ্তানি হতো। নিষেধাজ্ঞার পর এখন শুধু মাছ, সিমেন্ট ও শুঁটকি মাছ রপ্তানি হয়।