ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় সাবেক সাংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় সাবেক সাংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে

থানায় হামলা মামলায় নিক্সন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করার ব্যাখ্যা দিল পুলিশ

মুজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনকে কেন ভাঙ্গা থানায় হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশ। নিক্সন ফরিদপুর–৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। তাঁকে আসামি করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে আলোচনা–সমালোচনা হয়।

গতকাল শুক্রবার রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ও ফোকাল পয়েন্ট (মিডিয়া) এ বিষয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়। বিজ্ঞপ্তিতে পদবির নাম ও একটি স্বাক্ষর থাকলেও পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে এটি ফরিদপুর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আজমের স্বাক্ষর বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন।

‘ফরিদপুর–৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের ধারাবাহিক রাষ্ট্রবিরোধী, উসকানিমূলক বক্তব্য এবং সহিংসতায় রুজুকৃত মামলায় সংশ্লিষ্টতার প্রসঙ্গে’—শিরোনামে পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর–৪ আসন থেকে পৃথক করে ফরিদপুর–২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ভাঙ্গায় স্থানীয় জনসাধারণ অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এই কর্মসূচিকে পুঁজি করে সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক উসকানিমূলক বক্তব্য ও কার্যকলাপে ভাঙ্গা উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৯ সেপ্টেম্বর নিক্সন চৌধুরী এক ভিডিও বার্তায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে ‘অবৈধ’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান এবং প্রয়োজনে দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। নিক্সনের ভিডিও বার্তাটি তাঁর সমর্থকেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন এবং এর মাধ্যমে নিজের অনুসারীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে আন্দোলনে সহিংস হতে উসকে দেন।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ সেপ্টেম্বর নিক্সনের অনুসারীরা ভাঙ্গায় সাধারণ মানুষের আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে সহিংসতা চালান। তাঁরা ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, নির্বাচন অফিস ও কৃষি অফিসে ভাঙচুর চালান। সরকারি গাড়িতেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেন। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় মামলা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ায় ১৯ সেপ্টেম্বর আরেকটি ভিডিও বার্তায় নিক্সন চৌধুরী আবারও সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে ‘অবৈধ’ বলে আখ্যায়িত করেন। এ সময় তিনি পুলিশের সমালোচনা করে বলেন, মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশের মতে, এ বক্তব্যও সাধারণ মানুষকে উসকানি দেওয়ার শামিল।