
বগুড়ার শাজাহানপুরের ‘নুরু বাহিনী’র প্রধান মো. নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাজাহানপুর থানা-পুলিশ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নুরুজ্জামান শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছিলেন। শাজাহানপুর উপজেলা সদরের মাঝিড়া থেকে বনানী, ফুলতলা, নয়মাইল, আড়িয়াবাজার, সাবরুলসহ উপজেলাজুড়ে নুরু বাহিনীর দৌরাত্ম্য ছিল। নির্যাতনের ভয়ে তাদের অপকর্মের কথা বলতে সাহস পেত না কেউ।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল ওয়াদুদ আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বুধবার বিকেলে নুরুজ্জামানকে আটক করে আশুলিয়া মডেল থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন। খবর পেয়ে তাঁকে সাভার থেকে আনতে শাজাহানপুর থানা–পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়। আজ ভোরের দিকে তারা থানায় এসে পৌঁছেছে । নুরুজ্জামানকে আপাতত শাজাহানপুর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আজ দুপুর নাগাদ তাঁকে বগুড়ার আদালতে হাজির করা হবে।
ওসি আবদুল ওয়াদুদ আরও বলেন, নুরুজ্জামানের নামে ৫ আগস্টের আগে ১৩টি মামলা ছিল। পরে বগুড়া সদর থানায় দায়ের হওয়া বেশ কয়েকটি হত্যা মামলায় নুরুজ্জামান এজাহারনামীয় আসামি। সব মিলিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, পুলিশের ওপর হামলা, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দেড় ডজন মামলা রয়েছে।
গত বছরের ৭ এপ্রিল শাজাহানপুর থানায় ঢুকে অস্ত্র মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে হামলায় ৮ পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনার পর নুরুজ্জামান ও তাঁর সহযোগীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৫টি গুলিসহ দুটি বিদেশি পিস্তল, মাদক ও দেশি অস্ত্র জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় নুরুজ্জামানসহ ৪৫ জনকে আসামি করে পৃথক আইনে দুটি মামলা হয়।
ওই ঘটনায় প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে গত বছর ৭ এপ্রিল ‘বগুড়ায় থানায় ঢুকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ আটক ৯’ এবং ৮ এপ্রিল ‘থানায় “হামলা” চালিয়ে গ্রেপ্তার ‘নুরু বাহিনীর’ প্রধানের উত্থান যেভাবে’ যেভাবে শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ওই ঘটনার পরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে মো. নুরুজ্জামানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে অল্প দিনের মধ্যেই জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আত্মগোপন করেন তিনি।