
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় ভারতীয় সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া এ মতবিনিময় সভায় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি গ্রামবাসীকে ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম না করার আহ্বান জানান।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের বাখর আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিজিবি অধিনায়ক গোলাম কিবরিয়া তাঁর বক্তব্যে এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের এই শিবগঞ্জে যে ঘটনাটা ঘটেছিল, সেটার দিকে সারা বাংলাদেশ, সারা বিশ্বের নজর ছিল। ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া, দেশীয় মিডিয়া, সব মিডিয়ার আমাদের দিকে ফোকাস ছিল। সুতরাং এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যেটা আমাদের ওপর একটা নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট পড়ে। যখন আমি সিও হিসেবে জিরো লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, আপনাদের এখানে আসার দরকার নাই। আমি এনাফ বিএসএফকে সাইজ করার জন্য। যখন আমার প্রয়োজন হবে, তখন আমি বলব ঠিক আছে আমাদের গ্রামবাসীকে নিয়ে আসো, গিয়ে আমরা সাইজ করব। আমি না ডাকলে ওখানে ভিড় করে আমাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাবেন না। আমাদের হাতে অস্ত্র আছে, আমাদের ট্রেনিং আছে, সর্বশেষ হচ্ছে আমাদের মনোবল আছে এবং আমাদের পেছনে ১৮ কোটি মানুষ আছে। ১৮ কোটি মানুষ থাকলে আমার কি ভয় পাওয়ার কোনো কারণ আছে? ইনশা আল্লাহ, বিজিবি হবে সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক। ফার্স্টে হচ্ছে বিজিবির সৈন্যবাহিনী দাঁড়িয়ে থাকব, আপনি নিশ্চিত থাকুন, বর্ডার সিকিউরড। বর্ডারে নিরাপত্তা আছে। যেকোনো কাজে আমার সাহায্য-সহযোগিতা পাবেন। প্রতি পাঁচ কিলোমিটার দূরে দূরে বিজিবির ক্যাম্প। সীমান্ত–সম্পর্কিত যেকোনো কাজে বিজিবিকে পাশে পাবেন।’
গোলাম কিবরিয়া এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা মাদক আনার জন্য ভারতে যাবেন না। ৫০০ টাকা, ১ হাজার টাকার জন্য মাদক আনতে যাবেন না। প্রয়োজনে আমাকে ফোন দেবেন, আমি ওই টাকা আপনাকে দেব। মাদক চোরাচালানিদের আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে। আপনার এলাকার মাদক কারবারিদের আপনারাই চিহ্নিত করুন।’
সভায় শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজহার আলী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া, উপজেলার সীমান্তবর্তী শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক, মনাকষা ইউপি সদস্য কাজল আলী, বিনোদপুর ইউপি সদস্য বাদশা আলী ও কামাল উদ্দিন বক্তব্য দেন।
সীমান্তের শূন্যরেখার ১৫০ গজ এলাকায় কৃষক ছাড়া অন্য কেউ যাতে না ঢোকেন—বক্তারা এ ব্যাপারে সচেতন থাকার আহ্বান জানান। সীমান্তের যেকোনো সমস্যা বিজিবির কাছে তুলে ধরার পরামর্শ দেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সীমান্তবর্তী কিরণগঞ্জ, চৌকা, কালীগঞ্জ, জমিনপুর, বিশ্বনাথপুর ও আশপাশের গ্রামের কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।