
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কনকনে শীতে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর বাবার খোঁজ মিলেছে। আজ বুধবার দুপুরে ওই শিশুদের বাবা আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে দেখা দেখা করেন। তাঁদের কাছে শিশুদের পরিচয় নিশ্চিত করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, শিশুটির নানার বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়। তাদের বাবার বাড়ি খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় হলেও তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার মিয়ারবাজার এলাকায় রিকশা চালাতেন। জানতে চাইলে দুই শিশুর বাবা দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী ছয় মাস আগে দুই সন্তান নিয়ে তাঁকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর তিনি আর খোঁজ পাননি। ফেসবুকে ছবি দেখে সন্তানের খোঁজ পেয়েছেন। এ কারণে তিনি প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন।
এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের মাজারগেট এলাকা থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া শিশুদের মধ্যে মেয়েশিশুটির বয়স চার ও ছেলেশিশুটির বয়স দুই বছর। কনকনে শীতের মধ্যে সড়কের পাশ থেকে ওই দুই শিশুকে উদ্ধার করে প্রথমে নিজের কাছে রাখেন মহিম উদ্দিন নামের সিএনজিচালিত এক অটোরিকশার চালক। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শিশু দুটিকে হেফাজতে নেয় উপজেলা প্রশাসন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই দুই শিশুকে নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে যান আনোয়ারার ইউএনও তাহমিনা আক্তার। জেলা প্রশাসক তাদের চিকিৎসা ও যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নেন। পরে দুই শিশুর মধ্যে মেয়েশিশুকে অটোরিকশাচালক মহিম উদ্দিনের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়। আর গুরুতর অসুস্থ ছেলেশিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন আনোয়ারার ইউএনও তাহমিনা আক্তার। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পাওয়া দুই শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তাদের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশনা
প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘কনকনে শীতে সড়কের পাশে বসে ছিল দুই শিশু, উদ্ধার করলেন অটোচালক’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আজ এটি আমলে নেন আদালত। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাখাওয়াত হোসেনের পরিচালিত আদালত আনোয়ারা থানায় এ বিষয়ে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ‘শিশু আইন ২০১৩’ অনুযায়ী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ৫ জানুয়ারির মধ্যে এর লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতের এ আদেশ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন আনোয়ারা থানার ওসি মো. জুনায়েত চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালত শিশুদের ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা জানতে চেয়েছেন। আমরা শিশুদের বাবার খোঁজ পেয়েছি। তাঁর থেকে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’