
হাত–পায়ের সঙ্গে চোখ–মুখও রশি আর কাপড়ে বাঁধা। গায়ের শার্ট ভিজেছিল রক্তে। এমন অবস্থায় প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে পটুয়াখালী সদর উপজেলার পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাট এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
ওই ব্যক্তির নাম সোহাগ (৪২)। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদরের নিউ চাষাঢ়ার জামতলা এলাকার বাসিন্দা। নিজেকে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল সকালে ফেরিঘাট এলাকায় সেতুর প্রকল্পসংলগ্ন স্থানে দুটি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। প্রথমে ভেবেছিলেন গাড়িগুলো সেতুর কাজের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু একপর্যায়ে একটি প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে হাতের ইশারায় তাঁদের ডাকেন এক ব্যক্তি। এ সময় গাড়ির ভেতর থেকে অনবরত হর্ন বাজানো হচ্ছিল। কাছে গিয়ে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি হাত–পা, চোখ ও মুখ বাঁধা অবস্থায় কাতরাচ্ছেন এবং তাঁর শরীর রক্তে ভেজা। তখন তাঁরা পুলিশে খবর দেন। এরপর তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসারত অবস্থায় সোহাগ জানান, গত রোববার রাতে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের সামনে থেকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁর গাড়িতে উঠে পড়ে। এরপর তাঁর হাত–পা ও চোখ–মুখ বেঁধে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার অলিগলি ঘোরায়। এ সময় তাঁকে মারধর করা হয়। গতকাল ভোরে তারা তাঁকে পটুয়াখালী–মির্জাগঞ্জ রুটে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাটে ফেলে যায়।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সোহাগের পরিবারের কাছে খবর পাঠালে তাঁর স্ত্রী হেলিকপ্টারে পটুয়াখালীতে আসেন। এরপর একটি জিডি করে তিনি স্বামীকে নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। এরপর আমাদের কাছে আর কোনো তথ্য নেই। ভুক্তভোগী আমাদের কাছে অপহরণের বিষয়ে মুখ খোলেননি। তাঁর দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল। এ জন্য আমাদের পক্ষ থেকে তেমন কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।’
এদিকে নারায়ণগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির আহম্মেদ জানান, সোহাগ তাঁর থানা এলাকায় ব্যবসা করেন। কিন্তু ফতুল্লা থানার সরকারি তোলারাম কলেজের সামনে থেকে তিনি অপহরণ হন। তাই আইনগত সহায়তার বিষয়টি ফতুল্লা থানা–পুলিশ দেখবে। তদন্তের স্বার্থে আপাতত বিস্তারিত প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি।