
বাংলাদেশ আর আগের জায়গায় ফেরত যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। আজ শনিবার দুপুরে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউএফটি) দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে দিনব্যাপী এই সমাবর্তন হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন।
সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান শিল্পপতি কিহাক সাং। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিইউএফটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ফারুক হাসান এবং ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আইয়ুব নবী খান। বিইউএফটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য মো. মশিউল আজম ও মোহাম্মদ নাছির অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফারিয়া আফরিন বক্তব্য দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ ইমতিয়াজ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
বক্তব্যের শুরুতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র-জনতা ও বিইউএফটির ছাত্র শহীদ সেলিম তালুকদারের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান সরকারের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘কীভাবে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, তরুণসমাজ সেই পথ দেখিয়েছে। আজকের সমাবর্তনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা সেই পথের দিশারি। এই তারুণ্যের কারণেই ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ বদলে গেছে। এটা এক নতুন বাংলাদেশ। তরুণদের দেখানো পথে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ আর কখনো তার আগের জায়গায় ফেরত যাবে না।’
সমাবর্তনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ায় ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষ আজ তারুণ্যের দিকে তাকিয়ে আছেন। এই তরুণদের হাত ধরেই আমাদের নতুন সময় আসবে। আজকের সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী স্নাতকদের এই অর্জন দেশের সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করবে। এই স্নাতকেরা নিশ্চয়ই বাংলাদেশের সেসব শ্রমজীবী, কর্মজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য তাঁদের পেশাজীবনে ভূমিকা রাখবেন।’
বিইউএফটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ফারুক হাসান করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকেরা তাঁদের শিক্ষা, প্রযুক্তি ও দক্ষতার মাধ্যমে দেশের তৈরি পোশাক খাতকে বিশ্ববাজারে শক্তিশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন।
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ হাজার ৭৩১ শিক্ষার্থীকে স্নাতক এবং ৩২৮ জনকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান সমাবর্তনে ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন। এ সময় সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করায় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সাতজন এবং অ্যাপারেলস স্টাডিজ অনুষদের একজন শিক্ষার্থীকে ‘চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক’ দেওয়া হয়। এ ছাড়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ৪ জন এবং অ্যাপারেলস স্টাডিজ অনুষদের একজন শিক্ষার্থীকে ‘চেয়ারম্যান স্বর্ণপদক’ এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের চারজন, অ্যাপারেলস স্টাডিজ অনুষদের তিনজন, ফ্যাশন স্টাডিজ অনুষদের দুজন ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের দুজন শিক্ষার্থীকে ‘ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক’ প্রদান করা হয়।
সমাবর্তনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অনুষ্ঠানে তাঁদের পরিবারের সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, রেজিস্ট্রার, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফ্যাশন শোর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।