যশোরের চৌগাছা উপজেলার মিসকিন দফাদার। পেশায় তিনি একজন গাছি। ৫০ বছর ধরে খেজুরগাছ কেটে রস সংগ্রহ করে গুড়-পাটালি তৈরি করেন। ৯০টি খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করে শীত মৌসুমের দুই মাসে ৪০ হাজার টাকার রস, গুড়, পাটালি বিক্রি করেছেন তিনি। তাঁর ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ে। রস–গুড়ের ন্যায্য দাম পাওয়ায় ছেলেকে রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ কাটা শেখাবেন তিনি।
যশোরের চৌগাছা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা চত্বরে তিন দিনব্যাপী গুড়মেলায় যোগ দিয়ে মিসকিন দফাদার এ কথাগুলো বলেন।
বুধবার মেলা শুরু হয়েছে। শুক্রবার মেলা শেষ হবে। গুড়–পাটালি বিক্রি ও প্রদর্শনীর জন্য প্রথম দিনে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দুই শতাধিক গাছি মেলায় এসেছেন।
খেজুরের রস থেকে গুড় ও পাটালি তৈরির কাজ বেশ কঠিন। এ বিষয়ে মিসকিন দফাদার বলেন, ‘গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা অনেক পরিশ্রমের কাজ। আর রস থেকে গুড় তৈরি আরও কঠিন কাজ। এই কাজে পরিবারের সবাইকে সহায়তা করতে হয়। আমার স্ত্রী ও ছেলে সহায়তা করে। তিন বছর ধরে চৌগাছায় গুড়মেলা হচ্ছে। মেলায় গুড়ের দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। দুই বছর ধরে রস-গুড়ের ন্যায্য দাম পাচ্ছি। এখন ভাবছি, ছেলেকেও গাছ কাটা শেখাব।’
মিসকিন দফাদার জানালেন, গুড়–পাটালি বিক্রির কোনো সমস্যা নেই। বাড়ি থেকে লোকজন রস ও গুড় কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কাঁচা রসের ঠিলে, তরল গুড় ৪০০ টাকা এবং ৫০০ টাকা কেজি দরে পাটালি বিক্রি হচ্ছে।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম ফিতা কেটে গুড়মেলার উদ্বোধন করেন। চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান।