Thank you for trying Sticky AMP!!

দিনব্যাপী এই দইয়ের মেলায় এসেছেন পাবনা, নাটোর ও বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলার দই বিক্রেতারা। বুধবার সকালে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরের তাড়াশ মাঠে

ক্ষীরশা দই, শাহি দইয়ের বিখ্যাত সেই মেলা

বিদ্যার দেবী সরস্বতীপূজা উপলক্ষে আজ বুধবার সকাল থেকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরের তাড়াশ মাঠে ঐতিহ্যবাহী দইমেলা বসেছে। প্রতিবছর মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে উপজেলা সদরে দইমেলার আয়োজন করা হয়। স্থানীয়দের ভাষ্য, ২৫০ বছর ধরে এইমেলা হয়ে আসছে।

দিনব্যাপী এই দইয়ের মেলায় এসেছেন পাবনা, নাটোর ও বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলার দই বিক্রেতারা। মেলায় দইয়ের পাশাপাশি ঝুড়ি, মুড়ি-মুড়কি, চিড়া, বাতাসা, কদমাসহ নানা ধরনের খাবার বিক্রি হয়।

চলনবিল অঞ্চলের তাড়াশের দইমেলা নিয়ে আছে নানা কাহিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জমিদারি আমলে তাড়াশের জমিদার বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম দইমেলার প্রচলন করেছিলেন। সেই থেকে জমিদার বাড়ির সামনে রশিক রায় মন্দিরের মাঠে সরস্বতীপূজা উপলক্ষে দইমেলার প্রচলন হয়।

মেলায় দই নিয়ে এসেছেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার শ্রীপুর এলাকার দই প্রস্তুতকারী প্রবীণ তানু কাজি। তিনি বলেন, বয়স বাড়ছে, কিন্তু এ মেলার সময় হলেই আর ভালো লাগে না, আসতেই হয়। সব কিছুর দাম বাড়তি তাই, দইয়ের দামও কিছুটা বেড়েছে।

প্রতি বছরের মতো এবারও মেলায় দই নিয়ে এসেছেন তাড়াশ সদরের ঘোষপাড়ার উজ্জ্বল কুমার ঘোষ। তিনি বলেন, ঐত্যিবাহী এ মেলায় বিক্রি ভালো। তবে সব কিছুর দাম বেশি, তাই লাভ কম হবে।

বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা, সিরাজগঞ্জ’ শীর্ষক বইয়ে তাড়াশের এই দইমেলার বর্ণনা আছে। এতে বলা হয়েছে, একসময় এই মেলায় ৭০০-৮০০ জন ঘোষ ৮ থেকে ১০ হাজার মণ দই নিয়ে এসে বিক্রি করতেন। তখন অবশ্য মেলা হতো তিন দিনের। বর্তমানে দিনব্যাপী মেলায় কয়েক শ মণ দই বিক্রি হয়।

দই কিনতে ক্রেতাদের ভিড়। বুধবার সকালে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরের তাড়াশ মাঠে

দইমেলায় আসা এ অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারণে নামেরও ভিন্নতা আছে। যেমন—ক্ষীরশা দই, শাহি দই, শেরপুরের দই, বগুড়ার দই, টক দই, শ্রীপুরী দই ইত্যাদি।
তাড়াশ উপজেলা সনাতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় একটি কলেজের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক সনাতন দাশ বলেন, ঐতিহ্য মেনে সরস্বতীপূজার দিনে তাড়াশে দইমেলা হয়। সুষ্ঠু পরিবেশে এ মেলা সম্পন্ন করতে দলমত-নির্বিশেষে সবাই কাজ করেন।

তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম আতিকুল ইসলাম বলেন, দিনব্যাপী ঐতিহ্যের এই মেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে নিয়ে আসা ঘোষদের দই বিক্রি হয়। সেই সঙ্গে হারাতে বসা নানা পদের মিষ্টান্ন পাওয়া যায় এখানে।