রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনির আগে হাত জোড় করে এভাবে বাঁচার আকুতি জানান প্রদীপ লাল (বাঁয়ে)। নিজের পরিচয় বলছিলেন রূপলাল (ডানে)
রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনির আগে হাত জোড় করে এভাবে বাঁচার আকুতি জানান প্রদীপ লাল (বাঁয়ে)। নিজের পরিচয় বলছিলেন রূপলাল (ডানে)

রূপলাল–প্রদীপ লালকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে রূপলাল দাস (৪০) ও প্রদীপ লাল (৩৫) হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সোহাগ বাবু (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ইকরচালি ইউনিয়নের বালাবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। এ নিয়ে ওই ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

সোহাগ বাবু তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট গ্রামের বাসিন্দা।

এর আগে গত ১০ আগস্ট রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় সাত শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ ও স্থানীয় লোকজনের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ, ভিডিও ফুটেজ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখা গেছে, ঘটনার সঙ্গে সোহাগও জড়িত। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। তাঁকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৯ আগস্ট রাত সাড়ে আটটার দিকে মিঠাপুকুরের ছরান বালুয়া এলাকা থেকে ভাগনির স্বামী প্রদীপ লালকে নিয়ে ভ্যানে বাড়ি ফিরছিলেন রূপলাল দাস। পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে তাঁদের গতি রোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। একপর্যায়ে প্রদীপের কাছে থাকা কালো ব্যাগ তল্লাশি করে একটি পানীয়ের বোতল ও ওষুধ পাওয়া যায়। ঢাকনা খোলার পর দুর্গন্ধে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা রূপলাল ও প্রদীপ লালকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে পিটুনি দেন। একপর্যায়ে তাঁদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে রূপলালকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। অন্যদিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ভোরে প্রদীপ লালের মৃত্যু হয়।