ময়মনসিংহে ২০২২ সালের প্রথম অর্ধেক ভাগ ছিল প্রায় নিরুত্তাপই। তবে দ্বিতীয় ভাগে কিছু আলোচিত ঘটনা মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

ময়মনসিংহে ২০২২ সালের প্রথম অর্ধেক ভাগ ছিল প্রায় নিরুত্তাপই। তবে দ্বিতীয় ভাগে ময়মনসিংহের কিছু আলোচিত ঘটনা মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা মায়ের মৃত্যুর মুহূর্তে পেট চিড়ে নবজাতক জন্ম নেওয়ার মতো বিস্ময়কর ঘটনা দেখেছে ময়মনসিংহ।
২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা সাফ চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরেন। এ ঘটনা সারা দেশের মানুষের জন্য আনন্দের হলেও ময়মনসিংহের মানুষের জন্য যেন একটু বেশিই আনন্দের। কারণ, সাফজয়ী দলের আটজন ফুটবলারই ছিলেন ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের।
এ ছাড়া অক্টোবরে বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সমাবেশ ছিল বেশ আলোচিত। কারণ, আগের রাতে সম্মেলনস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হওয়ার ঘটনা প্রথম ঘটে ময়মনসিংহেই। বছরের একেবারে শেষ দিকে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বছর।
ট্রাকচাপায় বাবা-মায়ের মৃত্যু ও শিশু ফাতেমার জন্ম হয় ১৬ জুলাই দুপুরে। ত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম ও অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম দম্পতি। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ছিল আট বছর বয়সী শিশু সানজিদা। মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় মারা যান তিনজনই। তবে বিস্ময়করভাবে ওই সময় রত্নার পেট চিড়ে জন্ম নেয় নবজাতক। জন্মের সঙ্গে সঙ্গে নবজাতকের একটি হাতের কবজি ভেঙে যায়। প্রথমে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হলেও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষ বোর্ড গঠন করে শিশুটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। নবজাতকের পরিবার তার নাম দেয় ফাতেমা।
শিশু ফাতেমাকে দত্তক হিসেবে নেওয়ার জন্য দেশ ও বিদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ ফোন করেন ফাতেমার দাদা মোস্তাফিজুর রহমানকে। তবে শেষ পর্যন্ত শিশুটি রাজধানীর ছোটমণি নিবাসে পাঠায় স্থানীয় প্রশাসন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর সাফ নারী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এই সাফজয়ী দলের আটজন ফুটবলারের বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর গ্রামে। ঢাকায় পৌঁছার পর ছাদখোলা বাসে নারীদের সংবর্ধনা দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। পরে ২৯ সেপ্টেম্বর কলসিন্দুরের আট ফুটবলারকে বাড়ি ফেরার পথে ময়মনসিংহেও ছাদখোলা গাড়িতে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ১ অক্টোবর কিশোর আলোর জন্মদিনে এর সম্পাদক আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি দল কলসিন্দুরে গিয়ে কিশোর আলোর জন্মদিন পালন করে। ওই দিন স্থানীয় চেয়ারম্যানের আয়োজনে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আনিসুল হককে অতিথি করা হয়। প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কলসিন্দুরে কিশোর আলোর জন্মদিন পালনের খবর আলোচিত হয়।
১৫ অক্টোবর দ্বিতীয় বিভাগীয় সমাবেশ হয় ময়মনসিংহে। সমাবেশের আগের রাতে মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার দৃষ্টান্ত প্রথম ময়মনসিংহেই দেখা যায়।
ফেব্রুয়ারি মাসে ধোবাউড়া আওয়ামী লীগের সম্মেলন দিয়ে শুরু ময়মনসিংহের পর্ব। বছরের একেবারে শেষ দিকে ৩ ডিসেম্বর হয় ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের আগে ময়মনসিংহ নগরে তোরণ-ফেস্টুন আর ব্যানার দেওয়া হয়।