এম সাইফুর রহমানের স্মরণসভা

ফ্যাসিবাদী সরকার লুটপাট ও পাচারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে: মঈন খান

সিলেটে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। শুক্রবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ও সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানকে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রণেতা বলা হয়। তাঁর কনজারভেটিভ নীতি অনুসরণ করে দেশের অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছিল। পরবর্তী ফ্যাসিবাদী সরকার সেই নীতি থেকে বেরিয়ে এসে লুটপাট ও পাচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে।

শুক্রবার বিকেলে সিলেট নগরের বালুচর এলাকার শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এম সাইফুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মঈন খান। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভা হয়।

সভায় মঈন খান আরও বলেন, বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে আধুনিক ভ্যাট পদ্ধতির সংযোজন ছিল দেশের অর্থনীতির রক্ষাকবচ। সে সময় সাইফুর রহমান বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে সেই সিদ্ধান্ত না নিলে বাংলাদেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ত। অথচ এই পদ্ধতির বিরোধিতা করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। তারা রাজপথে আন্দোলন করেছিল, এমনকি হরতাল ডেকেছিল।

সাইফুর রহমানের একটি রাজনৈতিক মন্তব্য স্মরণ করে মঈন খান বলেন, ‘ওয়ান–ইলেভেনের সময় সাইফুর রহমান একটি কথা বলেছিলেন। আমার মনে হয়, তিনি তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে সে কথা বলেছিলেন। তিনি তখন সিঙ্গাপুরে চলে গিয়েছিলেন, যাওয়ার সময় ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “বামেরা শুধু ভাঙতে জানে, বামেরা গড়তে জানে না।” এটা একটা রাজনৈতিক বক্তব্য, কেউ এর সঙ্গে একমত হতে পারেন, কেউ একমত না–ও হতে পারেন। কিন্তু কথাটি কঠিন সত্য। আমরা বিএনপি যাঁরা করি, আমরা যাঁরা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করি, আমরা যাঁরা মধ্যপন্থার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, তাঁদের কাছে কিন্তু তাঁর এই বক্তব্য রাজনীতিতে অনেক কিছু শিক্ষা দিয়েছে।’

সাইফুর রহমানের অনেক অর্জন বর্তমান তরুণেরা জানেন না উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, সাইফুর রহমান ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তখন তাঁকে বিশ্বব্যাংকের গভর্নর হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এটা জাতি হিসেবে আমাদের গর্বের। সাইফুর রহমান ১৯৬৯ সালে বিলেত থেকে দেশে ফেরেন। তখন দেশে সিএ ডিগ্রিধারী মানুষের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। এরপর জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ বাজেট ঘোষণাকারী ছিলেন। ৩৬ বছরে এক ডজন বাজেট ঘোষণার কৃতিত্ব তাঁর।

আলোচনা সভায় সাইফুর রহমানের স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা  মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য মো. সাজেদুল করিম, নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য মো. ইকবাল, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. জিয়াউর রহমান চৌধুরী, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মাহবুব এলাহী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ সিলেটের সভাপতি শামিমুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ (মিলন) ও মিফতাহ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীম, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।