সাতক্ষীরার তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ নেওয়ার পর তাঁর মা ও স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকের নাম হাবিবুর রহমান মোড়ল (২৭)। তিনি উপজেলার আটারই গ্রামের বাসিন্দা আবদুল্লাহ মোড়লের ছেলে। অন্যদিকে আটক ব্যক্তিরা হলেন হাবিবুরের মা পারুলা বেগম ও তাঁর স্ত্রী সান্তা বেগম। কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, হাবিবুর প্রায়ই মাদকের টাকার জন্য তাঁর মা ও স্ত্রীকে চাপ দিতেন। গতকাল রাতে হাবিবুরের সঙ্গে তাঁর মায়ের কথা–কাটাকাটি হয়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
প্রতিবেশী ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, হাবিবুর দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবনের কারণে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েক দিন ধরে তিনি মোটরসাইকেল কেনার বায়না ধরেছিলেন। গতকাল রাত নয়টার দিকে বাড়িতে ফিরে মায়ের কাছে মোটরসাইকেল জন্য কেনার টাকা চান। টাকা না দিলে নিজেকে শেষ করার হুমকিও দেন। এ নিয়ে মা পারুলার সঙ্গে তাঁর কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ঘরের বারান্দায় ঘাস কাটার হাঁসুয়া নিয়ে হাবিবুর নিজের গলা কেটে ফেলতে উদ্যত হন। এ সময় পারুলা নিবৃত্ত করতে গেলে ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে ধারালো হাঁসুয়া লেগে হাবিবুরের গলায় ও মাথায় জখম হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাবিবুরকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক।
তালা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা রাজিব সরদার জানান, হাবিবুরের মাথা ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী জানান, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রাগের বশে হাবিবুরকে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে কোপ দেন তাঁর মা পারুলা। এতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাবিবুরের মা পারুলা ও স্ত্রী সান্তাকে থানায় নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন বলেন, আজ সকাল ১০টার দিকে মরদেহটির ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।