নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রায় ৭০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধার নাম নিগারন নেছা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুর সদর উপজেলার টেংরামারী গ্রামে
নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রায় ৭০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধার নাম নিগারন নেছা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুর সদর উপজেলার টেংরামারী গ্রামে

শেষ বয়সে আশ্রয়হীন নিগারন নেছা, নাতির বিরুদ্ধে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় জমিজমার দখল নিতে এক বৃদ্ধাকে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে নাতির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি উপজেলার গাড়াডোব গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে ওই বৃদ্ধা প্রতিবেশীর বাড়ির বারান্দা ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে দাবি করেছে কয়েকজন এলাকাবাসী।

প্রায় ৭০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধার নাম নিগারন নেছা। তিনি গাড়ডোব এলাকার বাসিন্দা।

গ্রামের কয়েকজন বলেন, নিগারন নেছা দীর্ঘদিন ধরে নাতির সঙ্গে একই বাড়িতে বসবাস করতেন। দুই বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যান। তাঁদের বড় ছেলে মাহবুব হোসেন মারা যান প্রায় ১০ বছর আগে। ছোট ছেলে মারা যায় মাত্র ২ বছর বয়সে এবং চার মেয়ে বিয়ের পর স্বামীর সংসারে থিতু হয়েছেন। এ অবস্থায় মাহবুবের একমাত্র ছেলে লিজন মিয়া সব সম্পত্তি একাই দখলে নেন। সম্প্রতি জমিজমা ও সম্পদের ভোগদখল নিয়ে নিগারনের সঙ্গে নাতি লিজনের বিরোধ তৈরি হয়। সেই বিরোধের একপর্যায়ে ওই বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন নাতি লিজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিগারন নেছা বারবার থেমে যাচ্ছিলেন। চোখের পানি মুছতে মুছতে তিনি বলেন, ‘এই ঘরেই আমি সংসার করেছি, সন্তান মানুষ করেছি। আজ সেই ঘরেই আমার ঠাঁই নেই। জমিও আমার নামে, তবু কেউ মানে না। এই বয়সে এসে পথে পথে ঘুরতে হবে, তা কোনো দিন ভাবিনি।’

মাজেদুল ইসলাম নামের প্রতিবেশী বলেন, দাদির প্রতি লিজন মিয়ার এমন আচরণ পুরো গ্রামের জন্য লজ্জার। এ বয়সে একজন মানুষকে এভাবে বের করে দেওয়া অমানবিক।

ধানখোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি নজরে এসেছে। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা, অস্থায়ী আশ্রয় ও আইনি সহায়তার বিষয়টিও বিবেচনায় আনার কথা বলা হয়েছে।

নিগারন নেছার মেয়ের স্বামী সদর আলী বলেন, দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে নিগারন নেছার নিরাপদ আশ্রয়, ন্যায্য অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা হোক। শেষ বয়সে যেন তাঁকে আর পথে পথে ঘুরতে না হয়।