বান্দরবানের আলীকদম

জুমঘরে রাখা গাদাবন্দুক নিয়ে খেলছিলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে পর্যটকের মৃত্যু

বান্দরবানের আলীকদমে আজ সোমবার সকালে জুমঘরে রাখা একটি গাদাবন্দুকের গুলিতে তোহা বিন আমিন (২২) নামের একজন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে রাত ৯টায় থানায় নিয়ে এসেছে। একই সঙ্গে নিহত ওই পর্যটকের সঙ্গে যাওয়া চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, আলীকদমের কুরুকপাতা ইউনিয়নের স্মরণী-মরণী এলাকায় গতকাল রোববার ম্রো জনগোষ্ঠীর একটি জুমঘরে পাঁচ পর্যটক রাত যাপন করেছিলেন। জুমঘরে ম্রোদের কেউ ছিলেন না। তবে জুমঘরে একটি গাদাবন্দুক রাখা ছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঢাকার ওই পাঁচ পর্যটক খালি জুমঘরে থাকা গাদাবন্দুক খেলনা ভেবে তা নিয়ে খেলছিলেন। এ সময় প্রচণ্ড শব্দে বন্দুকের গুলি বুকে বিদ্ধ হয়ে তোহা বিন আমিন লুটিয়ে পড়েন এবং সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। তাঁর বাড়ি ঢাকা ডেমরা থানার শান্তিবাগে। তাঁর বাবার নাম আল-আমিন। কুরুকপাতা ইউনিয়নের স্মরণী-মরণী এলাকাটি মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এবং উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে।

কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো আজ রাত ৯টার দিকে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দুর্গম স্মরণী-মরণী এলাকায় ম্রোরা জুমচাষ করেন। তাঁরা জুমঘরে সকালে গিয়ে বিকেলে পাড়ায় ফিরে আসেন। বিকেলের পর থেকে জুমঘর খালি পড়ে থাকে। সে রকম একটি খালি জুমঘরে ওই পাঁচ পর্যটক রাত যাপন করেন। সেখানে থাকা একটি বন্দুক নিয়ে খেলা করার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন, যেকোনো পর্যটক উপজেলা সদরের বাইরে কোথাও গেলে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করে ট্যুরিস্ট গাইড সঙ্গে নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ওই পাঁচ পর্যটক কোনো রকম অবহিতকরণ ছাড়া দুর্গম এলাকায় গিয়ে খালি জুমঘরে রাত যাপন করছিলেন।

জেলা পুলিশের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার আবদুল করিম জানিয়েছেন, পাঁচ পর্যটকের মধ্যে তোহা বিন আমিন নামের একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। জুমঘরে থাকা গাদাবন্দুক নিয়ে খেলার সময় এ ঘটনা ঘটে। বন্দুকটি ছিল মীর মাহাদ হাসানের হাতে। তাঁর হাত থেকে ছুটে যাওয়া গুলিতে তোহা নিহত হন। মীর মাহাদ হাসানের বাড়ি গেন্ডারিয়ার শ্যামপুরে। তাঁর বাবার নাম জসীম উদ্দিন। অন্য আরও তিন পর্যটকের নাম ও ঠিকানা জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।