‘এম সাদেক তাঁর কর্মের মাধ্যমে সবার মাঝে বেঁচে থাকবেন’

প্রথম আলো কুমিল্লার সদ্য প্রয়াত জ্যেষ্ঠ ফটোসাংবাদিক এম সাদেকের স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠান। শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলো কুমিল্লা কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলো কুমিল্লার সদ্য প্রয়াত জ্যেষ্ঠ ফটোসাংবাদিক এম সাদেককে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন প্রথম আলো কুমিল্লা কার্যালয়ে কর্মরত তাঁর সহকর্মী ও কুমিল্লা বন্ধুসভার বন্ধুরা। আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি ছিল এম সাদেকের জন্মদিন। এদিন বিকেলে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকায় অবস্থিত প্রথম আলো কুমিল্লা কার্যালয়ে তাঁর স্মরণসভা ও দোয়া আয়োজন করা হয়।

স্মরণসভায় প্রথম আলো কুমিল্লা কার্যালয়ে কর্মরত তাঁর সহকর্মী, কুমিল্লা বন্ধুসভার বন্ধুরা ছাড়াও নগরের বিশিষ্টজন, এম সাদেকের পরিবারের সদস্য ও দীর্ঘদিনের সহকর্মী সাংবাদিকেরা অংশগ্রহণ করেন। সবাই তাঁদের বক্তব্যে এম সাদেকের নানা স্মৃতি তুলে ধরেন। অনেকে এম সাদেকের সম্পর্কে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

প্রথম আলোর কুমিল্লা প্রতিনিধি আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, লালমাই সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান, কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হাসানাত, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জামিল আহমেদ খন্দকার, সাংবাদিক সমিতি কুমিল্লার সভাপতি ইয়াসমিন রীমা, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান এবং প্রথম আলো কুমিল্লার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা।

এ সময় প্রয়াত এম সাদেকের একমাত্র সন্তান কাউসার আহমেদ অভি তাঁর বাবার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

স্মরণসভায় কুমিল্লা বন্ধুসভার বন্ধুরা ছাড়াও নগরের বিশিষ্টজন, এম সাদেকের পরিবারের সদস্য ও দীর্ঘদিনের সহকর্মী সাংবাদিকেরা অংশগ্রহণ করেন। শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলো কুমিল্লা কার্যালয়ে

প্রথম আলো বন্ধুসভা কুমিল্লার সভাপতি মহিউদ্দিন লিটনের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন বন্ধুসভা কুমিল্লার সাবেক সভাপতি রেজবাউল হক, চন্দন দাস, টি আই সাদেক, তাহরিমা ইসলাম, সৈয়দ সাইদুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুস সাকিব বিন মোস্তফা, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কর্মকার, সাংগঠনিক সম্পাদক হানিফ মুসাব্বির, সাংস্কৃতিক সম্পাদক স্নেহা সাহা প্রমুখ। স্মরণসভা শেষে দোয়া পরিচালনা করেন নগরের কান্দিরপাড় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ইব্রাহিম। স্মরণসভায় কুমিল্লা বন্ধুসভার বন্ধুরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, পেশাগত ও ব্যক্তিজীবনে এম সাদেক একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। নিজের কর্ম ও দক্ষতায় ফটোসাংবাদিকতায় তিনি নিজেকে অনন্য স্থানে নিয়ে গেছেন। এম সাদেক তাঁর কর্মের মাধ্যমে সবার মাঝে বেঁচে থাকবেন। এম সাদেক লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে যেভাবে ফটোসাংবাদিকতা করেছেন, বর্তমান সময়ে সেটা বিরল।

বক্তারা আরও বলেন, এম সাদেক শুধু ভালো ছবিই তুলতেন না, একজন ভালো মানুষ ছিলেন। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত পেশাদারির সঙ্গে কাজ করে গেছেন তিনি। সব সময় চেষ্টা করেছেন প্রথম আলোকে নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য। ব্যক্তিজীবনে এম সাদেক একজন সৎ মানুষ ছিলেন। তিনি পারিবারিক জীবন অনেক কষ্ট আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পার করছেন, কিন্তু কখনোই নিজেকে অসৎ পথে ধাবিত করেননি। এম সাদেকের তোলা ছবিগুলো সব সময় কুমিল্লার কথা বলেছে। বক্তারা এম সাদেকের জন্য সবার কাছে দোয়া চান।

এম সাদেক কুমিল্লা নগরের অশোকতলা এলাকার বাসিন্দা। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বেলা সোয়া ১১টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। কুমিল্লা শহরতলির গোমতী নদীর পাড়ে চানপুর এলাকায় প্রথম আলোর জন্য ছবি তুলতে গিয়েছিলেন তিনি। পরে বেলা ১টা ৫৭ মিনিটে কুমিল্লা নগরের বেসরকারি একটি হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, পুত্রবধূ, নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী-শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন।