
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় ছুরিকাঘাতে আহত এক মুদিদোকানির মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে রাজধানীর কাকরাইল এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
গত বুধবার বেলা তিনটার দিকে সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের বাঘাইকান্দি এলাকায় মাহিম সরকার (২০) নামের ওই দোকানিকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সিগারেট বিক্রির টাকা চাওয়ার দ্বন্দ্বের জের ধরে নাঈম সরকার (২৬) নামের এক ব্যক্তি তাঁকে ছুরিকাঘাত করেন।
নিহত মাহিম সরকারের বাড়ি চরকেওয়ার ইউনিয়নের বাঘাইকান্দি এলাকায়। আর অভিযুক্ত নাঈম সরকারের (২৬) বাড়িও একই এলাকায়। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার নাঈমসহ দুজনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন মাহিমের বাবা সবুজ সরকার। ওই মামলায় নাঈম সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সজিব দে প্রথম আলোকে বলেন, মাহিমকে ছুরিকাঘাতের পরদিনই পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাঈমকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে। মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।
হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঘাইকান্দি এলাকায় মাহিম সরকারের মুদিদোকান আছে। নাঈম প্রায় সময় ওই দোকান থেকে পণ্য নিয়ে টাকা পরিশোধ করতেন না। গত মঙ্গলবার রাতে দোকানের কাজ শেষে মাহিম দোকানে ঘুমিয়ে ছিলেন। দিবাগত রাত ৩টার দিকে নাঈম মাহিমকে জোর করে দোকান খোলান এবং দুটি সিগারেট নেন। সিগারেটের টাকা পরিশোধ না করে নাঈম চলে যেতে চাইলে মাহিম বাধা দেন। এ সময় তাঁকে টাকা না দিয়ে হুমকিধমকি দিয়ে চলে যান নাঈম।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফোন দিয়ে মাহিমকে আবারও গালাগাল করেন তিনি। ঘটনাটি জানতে পেরে মাহিমের বাবা সবুজ শেখ বেলা তিনটার দিকে মাহিমকে নিয়ে নাঈমদের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাঘাইকান্দি রাস্তায় চাকু নিয়ে মাহিমের বুকে আঘাত করেন নাঈম। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে কাকরাইল এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় মাহিমকে। সেখানেই আজ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মাহিমের বাবা সবুজ সরকার বলেন, ‘নাঈম আমার চোখের সামনে ছেলেকে অনেক মারধর করেছে। একপর্যায়ে বুকের মধ্যে সুইচ গিয়ার ঢুকিয়ে দেয়। ছেলেকে বাঁচানোর জন্য গিয়ে ছিলাম, আমাকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে।’