Thank you for trying Sticky AMP!!

মা–বাবার পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত সংগীতশিল্পী খালিদ

গোপালগঞ্জ কোর্ট মসজিদের পাশে এস এম মডেল সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠে খালিদের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার দুপুরে

আশি ও নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও ‘চাইম’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট খালিদ সাইফুল্লাহকে গোপালগঞ্জে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের গেটপাড়া পৌর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

আজ জোহরের নামাজের পর গোপালগঞ্জ কোর্ট মসজিদের পাশে এস এম মডেল সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠে তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্বজনদের সঙ্গে ভক্ত-শুভানুধ্যায়ী, গীতিকার, সুরকারসহ বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন অংশ নেন। জানাজা শেষে লাশ গেটপাড়া কবরস্থানে নেওয়া হয়।

Also Read: ‘সরলতার প্রতিমা’ গায়ক খালিদ মারা গেছেন

খালিদ সাইফুল্লাহ

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ‘সরলতার প্রতিমা’খ্যাত এই গায়ক। সন্ধ্যায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে খালিদকে নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। কয়েক বছর ধরেই তিনি হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন; একাধিকবার হৃদ্‌রোগের চিকিৎসাও করিয়েছেন। তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে একটি স্টেন্ট বসানো ছিল। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে খালিদের লাশবাহী গাড়ি গোপালগঞ্জে পৌঁছায়।

উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর গোপালগঞ্জ জেলা সভাপতি নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মা-বাবার সাত সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠতম ছিলেন খালিদ। মা-বাবা কেউই বেঁচে নেই। একমাত্র সন্তান অরিককে নিয়ে স্ত্রী শামীমা জামান যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। খালিদ বাংলাদেশে থাকতেন। নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে পড়ালেখা করতাম। খালিদ ছাত্রজীবন থেকেই গান গাইত। আমরা সবাই মিলে তাঁর গান শুনতাম। বাল্যবন্ধু খালিদ আজ চলে গেল। তাঁর অভাব কোনোভাবেই পূরণ হবার নয়।’

Also Read: ফেরানো গেল না খালিদকে

সোমবার রাতে ঢাকার গ্রিনরোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে

গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ‘খালিদ ভাইয়ের সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি আছে। ভাইয়ের সঙ্গে আমি ছোটবেলায় গোপালগঞ্জে এসেছি। আজও এসেছি খালিদ ভাইয়ের জন্য। তবে ভাইকে চিরবিদায় জানাতে। খালিদ ভাইয়ের শূন্যতা অন্য কাউকে দিয়ে পূরণ হবে না।’

স্বজনেরা জানান, ১৯৬৫ সালের ১ আগস্ট গোপালগঞ্জে জন্ম নেন এই শিল্পী। ছোটবেলা কেটেছে সেখানেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ার সময় গানের প্রতি ভালোবাসা জন্মায় তাঁর। ১৯৮১ সালে এইচএসসির পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন। ১৯৮১ সালে গানের জগতে যাত্রা করেন। ১৯৮৩ সালে ‘চাইম’ ব্যান্ডে যোগ দেন।

খালিদ সাইফুল্লাহ (১ আগস্ট ১৯৬৫—১৮ মার্চ ২০২৪

একের পর এক ব্যবসাসফল গান উপহার দিয়ে অল্প সময়েই খ্যাতি পান খালিদ, তাঁর গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ‘সরলতার প্রতিমা’, ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’, ‘কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে’, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’, ‘হয়নি যাবারও বেলা’-এর মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গান তিনি শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন। এই শিল্পীর মৃত্যুতে সংগীত অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Also Read: গোপালগঞ্জে খালিদের মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন সহপাঠীরা

Also Read: খালিদ ভাই: কাছ থেকে–দূর থেকে দেখা নায়কের গল্প