চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতের ১৪ জন নাগরিককে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে (পুশ ইন) ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। ওই ১৪ জন বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে আছে।
ঠেলে পাঠানো ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন শিশু, পাঁচজন নারী ও পাঁচজন পুরুষ আছেন। তাঁরা নিজেদের ভারতের ওডিশা রাজ্যের জগৎসিংহপুর জেলার বাসিন্দা বলে দাবি করেছেন।
৬ বিজিবি চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের পরিচালক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে ঘন কুয়াশার সুযোগে দর্শনা নিমতলা সীমান্ত গেট খুলে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে পুশ ইন করে বিএসএফ। যাদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক নাগরিকও আছেন। ১৪ জনের সকলেই অবাঙালি। বাংলাদেশে তাঁদের আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত কেউ নেই। এর আগে এই ১৪ জনকে গত ২৩ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ পুশইনের চেষ্টা করেছিল বিএসএফ। তিনি বলেন, পুশ ইনের ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ড্যান্ট ছাড়াও বিজিবি বিএসএফ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে তাঁদের ভারতে ফেরত পাঠানো হবে।
চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কামাল হোসেন আজ বেলা একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার রাতেই ৬ বিজিবির পরিচালক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হাসান ১৪ জন ভারতীয় নাগরিকের পুশ ইনের বিষয়টি তাঁকে অবহিত করেছেন।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে দর্শনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই ১৪ জনকে দেখতে পাওয়া যায়। যাঁদের মধ্যে কয়েকজন অসুস্থ ছিলেন। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) একটি প্রতিনিধিদল তাঁদের উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করে। এরপর নিজেদের হেফাজতে নেয়।
পুশ ইন হয়ে আসা ব্যক্তিরা হলেন ভারতের ওডিশা রাজ্যের জগৎসিংহপুর জেলার বাসিন্দা গুলশান বিবি (৯০), শেখ জব্বার (৭০) এবং তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ উকিল (৪০), শেখ রাজা (৩৮) ও শেখ বান্টি (২৮), শেখ উকিলের ১১ বছর বয়সী শিশুকন্যা শাকিলা খাতুন ও শেখ রাজার তিন সন্তান ১২ বছর বয়সী মেয়ে নাসরিন পারভীন, ১১ বছর বয়সী ছেলে শেখ তৌহিদ ও ২ বছর বয়সী ছেলে শেখ রহিদ এবং আলকুম বিবি (৬৫), সামসেরি বিবি (৪০), সাবেরা বিবি (৩৫) ও মেহেরুন বিবি (২৫)।
ভুক্তভোগীরা চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, শুক্রবার দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাড়িতে ঢুকে তাঁদের আটক করে এবং নাগরিকত্বসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জব্দ করে। এরপর দর্শনা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়।