ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)
ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)

হাসপাতালের কেনাকাটায় অনিয়ম

ড্যাবের কুমিল্লা জেলা, মহানগর ও মেডিকেল কলেজ শাখার সব কার্যক্রম স্থগিত

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেনাকাটায় বড় ধরনের অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ মাসুম হাসানের বিরুদ্ধে। একটি সভায় বক্তব্যের সময় সংগঠনটির কুমিল্লা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক তাঁর বিরুদ্ধে লুটপাটে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন।

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ড্যাবের কুমিল্লা জেলা, মহানগর ও মেডিকেল কলেজ শাখা কমিটির সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাতে ড্যাবের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জহিরুল ইসলাম (শাকিল) স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে ড্যাবের কুমিল্লা মেডিকেল শাখার সাধারণ সম্পাদক সফিকুর রহমান এবং জেলা ও মহানগর কমিটির একাধিক নেতার সঙ্গে সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অসাংগঠনিক কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে ড্যাবের নির্বাচিত নেতাদের গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ড্যাবের কুমিল্লা জেলা, মহানগর ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ শাখার সব কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ড্যাব তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কেনাকাটায় বড় ধরনের অনিয়মের বিষয়টি জানাজানি হলে চিকিৎসক মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে ২৪ কোটি টাকার কেনাকাটায় চার কোটি টাকার বেশি লুটপাট হয়েছে। লুটপাটে হাসপাতালের পরিচালক মাসুদ পারভেজ ও ড্যাবের কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ মাসুম হাসান (এম এম হাসান) জড়িত বলে অভিযোগ। এরপর গত রোববার দুপুরে হাসপাতালের সম্মেলনকক্ষে ড্যাবের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ শাখা এবং জাতীয়তাবাদী চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও মেডিকেল কলেজ কর্মচারীদের উদ্যোগে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।

ওই সভা চলাকালে হঠাৎ উপস্থিত হন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও ড্যাবের কুমিল্লা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ হায়দার। সভায় আরিফ হায়দার জেলা সভাপতি এম এম হাসানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেন। একই সভায় এম এম হাসানও উপস্থিত ছিলেন। তাঁর উপস্থিতিতেই দীর্ঘ বক্তব্যে আরিফ হায়দার হাসপাতালের কেনাকাটায় অর্থ লোপাটের তথ্য তুলে ধরেন।

পরে একই সভায় এম এম হাসান তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।

ড্যাব কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি মিনহাজুর রহমানের (তারেক) সভাপতিত্বে সভায় কুমিল্লা মেডিকেলের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক, ড্যাব কুমিল্লা মেডিকেল শাখার সাধারণ সম্পাদক সফিকুর রহমানসহ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় অন্য বক্তারা এম এম হাসানের বিরুদ্ধে আসা প্রতিটি অভিযোগ তদন্তের দাবি জানান।

তবে ঘটনার পর থেকেই এম এম হাসান ও হাসপাতালের পরিচালক দাবি করেছেন, ড্যাবের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে।