
ফরিদপুর-১ আসনে (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী) মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর (৮০)। সোমবার বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিবুল ইসলামের কাছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের (এনডিএফ) প্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন।
১১ বারের মতো সংসদ সদস্য প্রার্থী হলেন শাহ মো. আবু জাফর। ১৯৭৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১০টি নির্বাচনে অংশ নিয়ে শাহ মো. আবু জাফর চারবার বিজয়ী হয়েছেন এবং ছয়বার পরাজিত হয়েছেন। বিগত ১০টি নির্বাচনে তিনি ছয়টি দল ও জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন।
শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর এবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের (ন্যাশনাল ডেমেক্রেটিক ফ্রন্ট—এনডিএফ) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এতে তিনি জনতা পার্টি বাংলাদেশ দলের সদস্য হিসেবে আছেন। এই ফ্রন্টের প্রার্থীরা জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রতীক বাইসাইকেল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
শাহ জাফর প্রথম নির্বাচনে অংশ নেন ১৯৭৯ সালে। ওই সময় তিনি আওয়ামী লীগের (মালেক) প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে বাকশালের প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন। ১৯৮৮ সালে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি বিজয়ী হন ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে।
১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১২ জুন জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন শাহ জাফর। ২০০১ সালে জাতীয় পার্টি (নাজিউর রহমান মঞ্জু) দলসহ বিএনপির জোট থেকে নির্বাচন করে তিনি পরাজিত হন। ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন শাহ জাফর। সর্বশেষ গত ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর শাহ জাফর বলেন, ‘আমি বারবার দলবদল করেছি, সত্য। তবে এতে আমার জনগণের কোনো ক্ষতি হয়নি। বরং তাঁদের উপকার করেছি। এলাকার একজন মানুষও বলতে পারবেন না আমার দ্বারা তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কিংবা আমি কারও জায়গাজমি দখল করেছি।’
নির্বাচনে অংশ নেওয়া একটি পক্ষ ভয়ভীতি দেখাচ্ছে অভিযোগ করে শাহ জাফর বলেন, ‘আমি রাজপথ থেকে উঠে আসা লোক, একাত্তরে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। আমাকে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। আমি নির্বাচনে আছি ও থাকব। সামনে যত বাধাবিঘ্ন আসুক, আমি পরোয়া করি না। প্রয়োজনে জনগণের কাতার থেকে হাদির মতো জীবন দেব, কিন্তু রক্তচক্ষুর কাছে নতি স্বীকার করব না।’
আমি বারবার দলবদল করেছি, সত্য। তবে এতে আমার জনগণের কোনো ক্ষতি হয়নি। বরং তাঁদের উপকার করেছি।শাহ মো. আবু জাফর
এ আসনে মোট ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এখানে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও জামায়াতের প্রার্থী ইলিয়াস মোল্লা। অন্য প্রার্থীরা হলেন মোহাম্মদ খালিদ বিন নাসের (বাংলাদেশ কংগ্রেস), সারাফাত হোসাইন (বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস), সুলতান আহমেদ (জাতীয় পার্টি), মৃন্ময় কান্তি দাস (বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি), হাসিবুর রহমান (জাতীয় নাগরিক পার্টি) ও শামসুদ্দিন মিয়া (বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী)। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, শেখ আব্দুর রহমান, আবুল বাশার খান, গোলাম কবির মিয়া, শাহাবুদ্দিন আহমদ ও লায়লা আরজুমান বানু।